ফাঁকা ঢাকা, ঘুরছেন অনেকেই

ঈদের পরদিন রাজধানীর রবীন্দ্র সরোবরে ঘুরতে এসেছেন অনেকেই
ছবি: দীপু মালাকার

সন্তানের চিকিৎসার জন্য রাজশাহী থেকে এসেছেন ফৌজিয়া পারভিন। দুই সপ্তাহ থেকে মিরপুরে আছেন। ঈদ উপলক্ষে কিছুদিন সময় কাটাতে সাইনবোর্ড এলাকায় আত্মীয়ের বাসায় এসেছেন। বেলা ১১টায় মিরপুর-১ থেকে বেরিয়ে সাইনবোর্ডে আসতে তাঁর সময় লেগেছে এক ঘণ্টা। অন্য সময় জ্যামজট পেরিয়ে এ পথ আসতে দুই–তিন ঘণ্টা লাগলেও আজ কোথাও কোনো যানজটে পড়েননি।

করোনা সংকটের মধ্যে আরও একটি ঈদ উদ্‌যাপন করছেন দেশবাসী। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী এ বছর ঘরেই ঈদ উদ্‌যাপন করার নির্দেশনা ছিল। তবু সাধারণ মানুষ খুশি ভাগ করে নিতে ঈদের দিন বিকেল গড়াতেই বের হয়েছিলেন নিকটাত্মীয়ের বাসায় ও খোলা জায়গায়। আজ এমন পরিকল্পনা করেছেন রাজধানীর অনেক বাসিন্দা।

আজ শনিবার দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায়, সড়কগুলো ফাঁকা। সড়কের পাশের বিভিন্ন অফিস ও দোকানও ছিল বন্ধ। গণপরিবহন চললেও যাত্রীসংখ্যা ছিল কম। নগরের ব্যস্ততম স্থান কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, টেকনিক্যাল, গুলিস্তানে ছিল না যানবাহনের জট। দীর্ঘ সময় পরপর এসব সড়কে যানবাহন চলতে দেখা যায়।

প্রধান সড়কে রিকশা চলতে দেখা যায়। এমন অবস্থা ছিল অন্যান্য সড়কেও। তবে উন্মুক্ত স্থানগুলোতে মানুষের জমায়েত ছিল চোখে পড়ার মতো। ছোট–বড় খাবার দোকানে ছিল ভিড় উপচে পড়া।

ঈদের পরদিন রাজধানীর মতিঝিল এলাকা ফাঁকা
ছবি: হাসান রাজা

ঈদের দিন ঘরেই ছিলেন সুমন হোসেন। পরিবার নিয়ে বাসায় ঈদ উদ্‌যাপন করেন। পরে আজ দুপুরে প্রয়োজনীয় কাজে বেরিয়েছিলেন। মগবাজার থেকে থেকে বনানী পর্যন্ত তিনিও কোনো যানজটে পড়েননি। তিনি বলেন, সড়কে যানজট না থাকলেও গণপরিবহনের সংখ্যা ছিল কম। যাত্রীবাহী বাসেও স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছিল না। অধিকাংশ বাসেই অর্ধেকের বেশি যাত্রী নেওয়া হয়েছে। আবার অনেকের মুখেই ছিল না মাস্ক।

সড়কে যানজট না থাকার কারণ হিসেবে মহানগর ট্রাফিক পুলিশ বিভাগ বলছে, মানুষ ঈদ উদ্‌যাপনে গ্রামে যাওয়ায় এবং করোনা সংক্রমণের কারণে ঘরেই ঈদ উদ্‌যাপন করায় সড়কে চাপ নেই। তবে বিকেলে স্থানীয় উন্মুক্ত স্থানে ঘোরাঘুরি করতে বের হওয়ায় কিছুটা যানজটের তৈরি হয়।

সড়ক ফাঁকা থাকায় একজন বেসরকারি চাকরিজীবী জানান, সকালে পরিবার নিয়ে তিনি নিজস্ব গাড়ি নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন। মাত্র কয়েক ঘণ্টায় তিনি পুরান ঢাকা, যাত্রাবাড়ী, রায়েরবাগ ঘুরে ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, বনানী, রামপুরায় এসেছেন। তিনি জানান, আজও ঘুরছে মানুষ। রাজধানীর বিভিন্ন উন্মুক্ত পার্ক ও স্থানগুলোতে রয়েছে মানুষের ভিড়। পাড়া-মহল্লার ও সড়কের পাশের খাবার দোকানগুলোতে চলছিল খাবার কেনাবেচা। বিশেষ করে হালকা নাশতা, পানীয়, মিষ্টি বিক্রি হচ্ছে বেশি। ধানমন্ডি ও আশপাশের এলাকায় কিছু রেস্তোরাঁয় বসে খেতেও মানুষকে দেখা যায়।

ফাঁকা রাজধানীর সচিবালয় এলাকা
ছবি: হাসান রাজা

একই কথা জানালেন পুরান ঢাকার স্থানীয় বাসিন্দা তাজনুর রহমান। দুপুরে তিনি ছেলেমেয়েদের নিয়ে বাহাদুর শাহ পার্ক ও মালিটোলা পার্কে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন। তাজনুর রহমান জানালেন, পার্ক দুটি নতুন করে দৃষ্টিনন্দন করায় বেড়াতে এসেছিলাম একটু আগে। তবে দুপুরেও মানুষের ভিড়। আর বিকেল হলে তো পা রাখার জায়গা থাকে না।