ফুলবাড়ী দিবসে প্রাণ-প্রকৃতিবিনাশী প্রকল্প বাতিলের দাবি

ফুলবাড়ী দিবস উপলক্ষে সমাবেশে বক্তারা। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ঢাকা, ২৬ আগস্ট
ছবি: প্রথম আলো

রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ প্রাণ-প্রকৃতিবিনাশী সব প্রকল্প বাতিল করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ–বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি। ফুলবাড়ী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়।

ফুলবাড়ী দিবস উপলক্ষে সেদিন নিহত তরিকুল, সালেহীন ও আল-আমিনের স্মরণে আজ বৃহস্পতিবার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দেন জাতীয় কমিটি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। পরে শহীদ মিনারের সামনে জাতীয় কমিটির ব্যানারে একটি সমাবেশ হয়।

জাতীয় কমিটির সমাবেশে তিন দফা দাবি জানানো হয়। এগুলো হলো এশিয়া এনার্জিকে (জিসিএম) বহিষ্কারসহ ফুলবাড়ী চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন, রামপাল-রূপপুরসহ প্রাণবিনাশী প্রকল্প ও উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের ষড়যন্ত্র বন্ধ করা এবং উত্তরবঙ্গসহ সারা দেশে সুলভে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা।

সমাবেশে সিপিবি নেতা রুহিন হোসেন বলেন, ফুলবাড়ী আন্দোলন ছিল স্বতঃস্ফূর্ত ও শান্তিপূর্ণ। কর্মসূচি শেষে নেতারা যখন এশিয়া এনার্জির অফিসের দিকে যান, তখন বিনা উসকানিতে পুলিশ ও বিজিবি গুলিবর্ষণ করে। গুলিতে তিনজন শহীদ হন। পরে দিনাজপুরসহ সারা দেশে হরতাল-প্রতিবাদ-বিক্ষোভ পালিত হয়। তিনি বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের পর তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘এই দাবির প্রতি সমর্থন জানাই এবং এই দাবি না মানার পরিণাম হবে ভয়াবহ।’ এ দাবি পূরণ না করে তিনি অন্যায় ও অনৈতিক কাজ করেছেন। জনগণ তাঁকে ক্ষমা করবে না। অবিলম্বে দাবি মেনে নিয়ে এশিয়া এনার্জিকে বহিষ্কার করতে হবে।

রুহিন হোসেন বলেন, আজ শুধু টাকা ও লুটপাটের জন্য রামপাল-রূপপুরের মতো প্রাণ-প্রকৃতিবিনাশী নানা প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। অবিলম্বে এসব প্রকল্প বাতিলের দাবি জানান তিনি। ফুলবাড়ী আন্দোলনের নেতাদের নামে হওয়া মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিও জানান তিনি।

আজ ২৬ আগস্ট। ২০০৬ সালের এ দিনে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে এশিয়া এনার্জি নামের একটি কোম্পানির কয়লা প্রকল্পের বিরুদ্ধে স্থানীয় মানুষের বিশাল সমাবেশে সেই সময়ের বিডিআর গুলি চালালে তিনজন নিহত হন। আহত হন দুই শতাধিক আন্দোলনকারী। এরপর ফুলবাড়ীর পার্শ্ববর্তী পার্বতীপুর, বিরামপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনের মুখে সরকার আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নিয়ে ‘ফুলবাড়ী চুক্তি’ করতে বাধ্য হয়। এরপর থেকে দিনটিকে ‘ফুলবাড়ী দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছেন আন্দোলনকারীরা।