ফেসবুকে তরুণীর আত্মহত্যার স্ট্যাটাস, বাসায় হাজির পুলিশ

আত্মহত্যা করতে চান—ফেসবুকে এমন স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন ঢাকার রূপনগরের এক তরুণী। এই স্ট্যাটাস দেখে তাঁরই এক সাবেক সহকর্মী ফোন করেন বাংলাদেশ পুলিশ পরিচালিত ‘জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯’–এ। আর ফোন পেয়েই ওই তরুণীকে উদ্ধার করতে তাঁর বাসায় ছুটে যায় রূপনগর থানা–পুলিশ। পুলিশ তরুণীকে বুঝিয়ে তাঁরই এক বান্ধবীর বাসায় রেখে আসে এবং কথা বলে মেয়েটির স্বামীর সঙ্গেও।

পুলিশের পরিদর্শক ও জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯–এর ফোকালপারসন আনোয়ার সাত্তার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানিয়েছেন।

ঘটনাটি মঙ্গলবার রাত সাড়ে নয়টার দিকের। ওই সময় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯–এ একজন ব্যক্তি ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে ফোন করে জানান, তিনি একজন সাংবাদিক, একটি ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে কাজ করেন। তাঁর সাবেক সহকর্মী এক তরুণী, যিনি একই টিভি চ্যানেলে সংবাদকর্মীর কাজ করতেন, তিনি ফেসবুকে একাধিক স্ট্যাটাস দিয়েছেন, তিনি আত্মহত্যা করতে যাচ্ছেন, বন্ধুদের তিনি বিদায় জানিয়েছেন এবং তাঁর লাশ নেওয়ার জন্য মিরপুরের রূপনগর যাওয়ার জন্যও বলেছেন। ওই ব্যক্তি জানান, তাঁর সাবেক সহকর্মী বর্তমানে রূপনগর আবাসিক এলাকায় তাঁর স্বামীর বাসায় আছেন।

তিনি ৯৯৯–কে তাঁর সহকর্মীকে উদ্ধারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান।
৯৯৯ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কলারের সঙ্গে রূপনগর থানার দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তার কথা বলিয়ে দেওয়া হয়। সংবাদ পেয়ে রূপনগর থানা-পুলিশের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়।

পরে রূপনগর থানার এসআই এনামুল ৯৯৯–কে ফোনে জানান, তিনি ঘটনাস্থলে আছেন, তরুণী তাঁর জিম্মায় আছেন, তিনি তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন। এরপর ৯৯৯ থেকে তরুণীর সঙ্গে ফোনে কথা বলা হলে কান্নায় ভেঙে পড়ে তরুণী জানান, তিনি বিকেলে ঝিনাইদহ থেকে রূপনগরে তাঁর স্বামীর বাসায় এসে পৌঁছান। কিন্তু বাসায় ঢুকতে গিয়ে দেখেন, তাঁর স্বামী, যিনি একজন মেরিন ইঞ্জিনিয়ার, বর্তমানে ঢাকার বাইরে আছেন। তাঁর স্বামী বাসার দারোয়ানকে বলে দিয়েছেন, তাঁকে যেন বাসায় ঢুকতে দেওয়া না হয়। তরুণী জানান, কয়েক শ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে এসে তিনি বাসায় ঢুকতে পারছেন না, রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি আরও জানান, তিনি তাঁর স্বামীর কারণে মিডিয়ার চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন এবং তাঁর স্বামী তাঁকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন। হতাশাগ্রস্ত হয়ে তিনি আত্মহত্যার চিন্তা করেছেন এবং ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

৯৯৯ তরুণীকে তাঁর প্রয়োজনীয় সব আইনি সহায়তার আশ্বাস দেয় এবং আত্মহত্যার মতো কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানায়। পরে এসআই এনামুল ৯৯৯–কে জানান তিনি তরুণীকে রূপনগরে তাঁর এক বান্ধবীর বাসায় পৌঁছে দিয়েছেন। এনামুল জানান, তরুণীর স্বামীর সঙ্গে তিনি ফোনে কথা বলেছেন এবং তিনি (তরুণীর স্বামী) তাঁকে জানিয়েছেন ঢাকায় ফিরে তিনি বিষয়টি মীমাংসা করে নেবেন।