ফোনে চাইতেন চাঁদা, না পেলে করতেন ডাকাতি

ডাকাত চক্রের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব
ছবি: প্রথম আলো

শীর্ষ সন্ত্রাসী পরিচয়ে ব্যবসায়ী ও নির্মাণাধীন বাড়ির মালিকদের কাছে মুঠোফোনে চাঁদা দাবি করতেন তাঁরা। না পেলেই করা হতো ডাকাতি। এই চক্রের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সম্প্রতি রাজধানীর মিরপুরে একটি মোটরসাইকেলের শোরুমে ডাকাতির ঘটনায়ও তাঁরা জড়িত ছিলেন বলে সন্দেহ করছে র‌্যাব।

আজ রোববার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান। এর আগে গতকাল শনিবার ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও ধামরাই এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন জহিরুল ইসলাম ওরফে জহির (৩৩), মো. জসিম উদ্দিন (৩৪), মো. জাহিদুল ইসলাম শিকদার (২৬), মো. খায়রুল, মো. রাকিব হাসান (২০) ও  মো. নয়ন (২৮)। তাঁদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অটোরিকশা চুরি ও ছিনতাইয়ের একাধিক মামলা রয়েছে।

খন্দকার আল মঈন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ভিওআইপি নম্বর ব্যবহার করে শীর্ষ এক সন্ত্রাসীর পরিচয়ে আবদুল খালেকের কাছে চাঁদা দাবি করেন। বেশ কয়েকবার ফোন করেও চাঁদা পাননি। এর প্রায় ৩ মাস পর ১১ অক্টোবর জসিম উদ্দিনের মোহাম্মদপুরের বাসায় বসে ডাকাতির পরিকল্পনা করা হয়।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ১২ অক্টোবর সন্ধ্যায় মিরপুরের শ্যামলীবাগ এলাকায় আবদুল খালেকের ‘ইডেন অটোস’ নামের মোটরসাইকেলের শোরুমে ডাকাতি হয়। ডাকাত দলের সদস্যরা শোরুমের ব্যবস্থাপক ওয়াদুদ সজীব ও টেকনিশিয়ান নুরনবী হাসানকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করেন। পরে তাঁরা দোতলায় উঠে ভাঙচুর চালিয়ে প্রায় তিন লাখ টাকা ও একটি মনিটর নিয়ে পালিয়ে যান।

র‌্যাব জানিয়েছে, ইডেন অটোসে ডাকাতিতে অংশ নেন মূল হোতা জহিরুল ইসলাম, জাহিদুল ইসলাম শিকদার, খায়রুল, রাকিব হাসান ও নয়ন। এ সময় বাইরে পাহারায় ছিলেন জসিম উদ্দিন।

এ বিষয়ে শোরুমের মালিক আবদুল খালেক বলেন, ‘তাঁরা চাঁদা দাবি করেছিলেন। কিন্তু আমি বিষয়টিকে গুরুত্ব দিইনি। পরে তাঁরা আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ডাকাতি করেন। ঘটনার পর মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করি।’

খন্দকার আল মঈন জানান, ৮-১০ সদস্যের এই চক্র নানা অপরাধে জড়িত। দীর্ঘদিন ধরে চক্রটি মোহাম্মদপুর, বসিলা ও শ্যামলী এলাকায় চাঁদাবাজি, চুরি ও ডাকাতি করে আসছে। চক্রের সদস্যদের মধ্যে জহিরুল ইসলাম একসময় অটোরিকশা চালাতেন। একপর্যায়ে অটোরিকশা চুরি করে বিক্রি করা শুরু করেন। কয়েক বছর আগে তিনি এই চক্র গড়ে তোলেন। চক্রের অন্যতম সদস্য জসিম উদ্দিন স্থানীয় একটি হাউজিং কোম্পানিতে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে চাকরি করতেন। পাশাপাশি নানা অপরাধে জড়িত ছিলেন। অপর দিকে গ্রেপ্তার খায়রুল ও নয়ন ১০ হাজার টাকার চুক্তিতে ডাকাতিতে অংশ নেন।