বছিলাবাসীর দাবি পৃথক থানা

মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকায় গত কয়েক বছরে অনেক বহুতল ভবন নির্মিত হয়েছে। বাড়ছে এলাকায় বসবাসকারীর সংখ্যা। সেই সঙ্গে বছিলায় ছিনতাই, মাদকের মতো অপরাধও বেড়েছে। বর্তমানে বছিলা এলাকাটি হাজারীবাগ ও মোহাম্মদপুর দুই থানার অন্তর্ভুক্ত। পুরো বছিলাকে একটি পৃথক থানা ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
মোহাম্মদপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী সেতুর (বছিলা ব্রিজ নামেই বেশি পরিচিত) নিচের এলাকাটি বছিলা নামে পরিচিত। সেতুর ঠিক নিচের বছিলা প্রধান সড়কের উত্তর পাশের এলাকা হাজারীবাগ থানার অন্তর্ভুক্ত আর সড়কের দক্ষিণ পাশের এলাকা মোহাম্মদপুর থানাধীন। এলাকাবাসীর দাবি, দুই থানার বদলে বছিলাকে একটি থানা করা হলে এলাকার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও জোনের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার প্রথম আলোকে বলেন, মোহাম্মদপুর ও এর আশপাশে নতুন অনেক আবাসিক এলাকা গড়ে উঠছে। নতুন একটি থানা হলে এসব এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা সহজ হবে। অনেক দিন আগেই মোহাম্মদপুর থানাকে ভাগ করে নতুন থানা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। একটি নতুন থানা গঠন করতে হলে যেসব তথ্য প্রয়োজন, সেগুলোও জমা দেওয়া হয়েছে।
বছিলা এলাকার বর্তমান মূল সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে মাদক। এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এলাকায় বেশ কয়েকটি বহুতল ভবনের নির্মাণকাজ চলছে। এসব ভবনে মাদকসেবীদের আড্ডা বসে। আর নদীতীরের দিকের ফাঁকা এলাকায় দিনের বেলায়ও মাদক নিতে দেখা যায়।
বছিলা মধ্যপাড়া এলাকার দুই বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পুলিশ মাঝেমধ্যে মাদকবিরোধী অভিযান চালায়। কিন্তু কয়েক দিন পর আবার আগের অবস্থা ফিরে আসে। অনেক সময় মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযানে দুই থানার সমন্বয় হয় না।
বছিলা এলাকাটি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত। এ বিষয়ে ওয়ার্ড কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীব প্রথম আলোকে বলেন, বছিলা এলাকাটি দিন দিন ঘনবসতিপূর্ণ হয়ে উঠছে। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই বছিলাকে পৃথক থানা করার একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। রায়েরবাজার বা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নামে নতুন থানার জন্য একটি জায়গাও চিহ্নিত করা হয়েছে।
কিছুদিন আগেও বছিলা এলাকার সড়কগুলোতে কোনো সড়কবাতি ছিল না। ফলে সন্ধ্যার পরপরই অন্ধকারে ডুবে যেত পুরো এলাকা। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে গত ৮ মে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে পুরো বছিলা এলাকায় ২৬৫টি সড়কবাতি লাগানো হয়েছে। বেড়িবাঁধ তিন রাস্তার মোড় থেকে বছিলা সেতু পর্যন্ত ৬৫টি (খুঁটিসহ) সোডিয়াম বাতি ও বছিলায় ২০০টি নতুন (খুঁটিসহ) সড়কবাতি বসানো হয়েছে।
এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রাস্তার পাশে নতুন খুঁটিতে বাতি লাগানো হয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সড়কবাতি লাগানোয় এলাকায় যাতায়াতে সুবিধা হয়েছে। সন্ধ্যার পরে গলির ভেতর আলোকিত হওয়ায় এলাকার নিরাপত্তাও বেড়েছে। তবে দেড় মাস না যেতেই বেশ কিছু সড়কবাতি নষ্ট হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান বলেন, ‘বছিলায় আগে কখনো সড়কবাতি ছিল না। বাতিগুলো লাগানোয় সন্ধ্যার পরে অপরাধের মাত্রা কমছে। বজ্রপাত ও বৃষ্টির কারণে নষ্ট হওয়া কিছু বাতি মেরামতের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’