বন্ধুদের চোখে দুর্জয়

বাসচাপায় নিহত শিক্ষার্থী মাইনুদ্দিন ইসলাম দুর্জয়
ছবি: সংগৃহীত

শিক্ষার্থী মাইনুদ্দিন ইসলাম দুর্জয় গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে রামপুরা টিভি রোডের পলাশবাগ এলাকায় বাসচাপায় নিহত হয়। সে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ফলের অপেক্ষায় ছিল। ভগ্নিপতি সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে রাস্তা পার হচ্ছিল। এ সময় অনাবিল পরিবহনের একটি বাস আরেক পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে মাইনুদ্দিনকে চাপা দেয়। এতে মাইনুদ্দিন ঘটনাস্থলে নিহত হয়।

আড্ডার সঙ্গীর মৃত্যুর বিচারের দাবিতে রাস্তায় নেমেছে মাইনুদ্দিনের বন্ধু ও শিক্ষার্থীরা। আতিকুল ইসলাম একরামুন্নেছা স্কুল অ্যান্ড কলেজ ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। নিহত দুর্জয়ের এক ব্যাচ ছোট হলেও বন্ধুর মতোই মিশত তারা। সে বলে, ‘ছোটকাল থেকেই একই স্কুলে, একই এলাকায় বেড়ে উঠেছি। একই স্কুলে পড়ি। সে আমাদের বন্ধু সার্কেলের। আমাদের মধ্যে সে ছিল ডায়মন্ড। পড়াশোনায়ও ছিল খুব মনোযোগী। গত পরশু শেষ দেখা হয়েছিল। চা খেয়েছিলাম একসঙ্গে। যাওয়ার সময় বলেছিলেন, দেখা হবে আবার। দেখা হলো, তবে তার লাশের সঙ্গে।’

আতিকুল ইসলাম বলে, ‘গতকাল রাতে ওর নাম্বার থেকে ফোন আসে। কেউ একজন বলে, মাইনুদ্দিন মারা গেছে। আমি ভেবেছিলাম ওর ফোন থেকে কেউ মজা করছে। তাই পাত্তা দিইনি। অনেকক্ষণ পর দেখলাম লোকজন কাঁন্নাকাটি করছে ওর বাসার ওদিকে। তখন শুনলাম সে আসলেই চলে গেছে।’

একই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহফুজুল ইসলাম আপন। সে বলছে, ‘দেড় বছর আগে মাইনুদ্দিনের সঙ্গে পরিচয়। এর পর থেকে আমরা একসঙ্গেই আড্ডা দিতাম অবসর সময়ে। গত বছর বিধিনিষেধের পর একসঙ্গে সীতাকুণ্ডে ট্যুর দিয়েছিলাম। গত পরশু ওর সঙ্গে ব্যাডমিন্টন খেলেছি। দারুন খেলত ও। খুবই মিশুক স্বভাবের ছিল। কাজেই এক ব্যাচ সিনিয়র হলেও আমরা ছিলাম মূলত বন্ধু। নিশ্চুপ স্বভাবের ছিল। কোনো ঝামেলায় জড়াত না। বন্ধুদের মধ্যে কোনো মনোমালিন্য হলে সে মীমাংসা করত। এমন কেউ নাই যে ওর কথা শুনত না।’