বাসে আগুন দেওয়ার একাধিক ভিডিও ফুটেজ পেয়েছে পুলিশ

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঘাটারচর টু চিটাগাং রোডে চলাচলকারী রজনীগন্ধা পরিবহনে আগুন লাগে। ঢাকা, ১২ নভেম্বরছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় পুলিশ একাধিক ভিডিও ফুটেজ পেয়েছে। তাতে কয়েকজনের চেহারা পরিষ্কারভাবে দেখা গেছে। তাঁদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

বৃহস্পতিবার  দুপুর ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টার মধ্যে নয়াপল্টনে, গুলিস্তান, আজিজ সুপার মার্কেটের সামনে, সচিবালয়ের উত্তর পাশে,পুরান ঢাকার নয়াবাজারে, পল্টন,  মতিঝিল ও ভাটারায় নয়টি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।

আগুনে পুড়ে যাওয়া বাসের মধ্যে তিনটি সরকারি। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, দুপুর ১২টার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের উত্তর পাশে পার্ক করে রাখা একটি সরকারি বাসে প্রথম আগুন দেওয়া হয়। সবশেষ বিকেল সাড়ে চারটায় ভাটারা এলাকায় আরেকটি বাসে কে বা কারা আগুন ধরিয়ে দেয়।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, দুর্বৃত্তরা যাত্রীবেশে বাসগুলোতে আগুন লাগিয়ে দ্রুত পালিয়ে গেছে। যেসব বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, তাতে ৩ জন থেকে সর্বোচ্চ ১২ জন যাত্রী ছিল।

হঠাৎ কী কারণে এতগুলো বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটল, সে বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিটি ঘটনা একইভাবে ঘটেছে। এর সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়েছে। একাধিক ঘটনার ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেছে। তাতে কয়েকজনের চেহারা পরিষ্কারভাবে দেখা গেছে। অগ্নিসংযোগকারীদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুন

দুপুরের দিকে প্রথম খবর আসে, নয়াপল্টন এলাকায় কে বা কারা একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। এর এক ঘণ্টার মধ্যে খবর আসতে থাকে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় একই রকম ঘটনা ঘটছে। মাত্র সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে একে একে নয়টি বাস পুড়িয়ে দেওয়া হয়।কারা এবং কেন এসব ঘটনা ঘটিয়েছে, সে সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হতে না পারলেও পুলিশ বলেছে, এসব ঘটনা পরিকল্পিত।

আরও পড়ুন

স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি বাসে অগ্নিসংযোগ করেছে বলে দাবি করেছে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ। ঘটনার প্রতিবাদে বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে পৃথক প্রতিবাদ সমাবেশ ও মিছিল করা হয়। এসব সমাবেশে অভিযোগ করা হয়, দেশকে অস্থিতিশীল করতে নীলনকশার অংশ হিসেবে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে বিএনপি। বিএনপির এই নীলনকশা বাস্তবায়িত হবে না।

অন্যদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই ন্যক্কারজনক ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যমূলক। তিনি দলের পক্ষ থেকে এ ধরনের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। গত রাতে এক বিবৃতিতে ফখরুল বলেন, বিএনপি মনে করে, ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনের উপনির্বাচনে ভোটাধিকার হরণের চিত্র আড়াল করার লক্ষ্যে ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডারদের দিয়ে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে গণপরিবহনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এসব দুষ্কর্মের মাধ্যমে সরকার আগের মতোই বিএনপিকে হেয়প্রতিপন্ন করতে চায়। এসব ঘটনার দায়দায়িত্ব বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর চাপিয়ে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা করে হয়রানি করতে চায়।

আরও পড়ুন