বিচারাধীন বিষয়ে সংবাদ পরিবেশনে ৭১ টিভি সতর্ক থাকবে, প্রত্যাশা হাইকোর্টের

হাইকোর্ট ভবন
ফাইল ছবি

পলাতক ও অভিযুক্ত ব্যক্তির মন্তব্য, কথোপকথন, সাক্ষাৎকার, টক শোসহ বিচারাধীন বিষয়ে সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে ৭১ টিভি আরও যত্নশীল ও সতর্ক থাকবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা আবেদন নিষ্পত্তি করে এ আদেশ দেন।

প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা পাচার ও আত্মসাতের অভিযোগ নিয়ে বিদেশে পলাতক আছেন এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদার। গত ২৮ ডিসেম্বর ৭১ টিভি লাইভ টক শোতে তাঁর সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়।

এমন প্রেক্ষাপটে টেলিভিশন চ্যানেলটির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে আবেদন করে দুদক। এর শুনানি নিয়ে ১০ জানুয়ারি হাইকোর্ট পি কে হালদারের সাক্ষাৎকার ও লাইভ টক শোতে তাঁর বক্তব্য প্রচার বিষয়ে ৭১ টিভি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য শুনতে ১৭ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন। এর ধারাবাহিকতায় শুনানি নিয়ে আজ এই আদেশ দেওয়া হয়।

আদালতে ৭১ টিভির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আশরাফ আলী। দুদকের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন মানিক শুনানিতে অংশ নেন।

আদালত বলেছেন, ৭১ টিভি কর্তৃপক্ষ বলেছে, ওই সংবাদ ও টক শো প্রচারের ক্ষেত্রে তাদের অসৎ উদ্দেশ্য ছিল না। সরল বিশ্বাসে সম্প্রচার করেছে। এ ধরনের সংবাদ ও টক শো সম্প্রচার করা থেকে তাদের বিরত রাখার আদেশ নেই। বিষয়টি নমনীয় দৃষ্টিতে দেখা হচ্ছে। ইতিপূর্বে ৭১ টিভি এ ধরনের কাজ করেছে, এমন কোনো নজির বা দৃষ্টান্ত দুদকের আইনজীবী দেখাতে পারেননি। ওই ঘটনা প্রথম। এ পর্যায়ে আদালত অবমাননার রুল ইস্যু করতে ইচ্ছুক নন। দুদকের করা আদালত অবমাননার আবেদন নিষ্পত্তি করা হলো পর্যবেক্ষণ ও মতামতের সাপেক্ষে।

পলাতক, অভিযুক্ত ও বিচারাধীন বিষয়ে সংবাদ পরিবেশনে ৭১ টিভি আরও যত্নশীল ও সতর্ক থাকবে বলে প্রত্যাশা করেন আদালত। আদালত বলেন, গত ৩০ ডিসেম্বর দেওয়া নিষেধাজ্ঞা রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বা পরবর্তী আদেশ দেওয়া পর্যন্ত চলমান থাকবে। আদালতে আবেদনটি নিষ্পত্তি করা হলো। ৭১ টিভি পলাতক, অভিযুক্ত ও বিচারাধীন বিষয়ে কোনো ধরনের মন্তব্য, সাক্ষাৎকার, কথোপকথন, সংবাদ ও টক শো প্রচার ও প্রকাশে ভবিষ্যতে সতর্ক ও সক্রিয় থাকবে।

এর আগে গত ৩০ ডিসেম্বর হাইকোর্ট তদন্তাধীন বা আদালতে বিচারাধীন অজামিনযোগ্য ও আমলযোগ্য অপরাধে অভিযুক্ত, দণ্ডিত, পলাতক দণ্ডিত ও আসামির বক্তব্য, কথোপকথন ও সাক্ষাৎকার গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ থেকে বিরত রাখতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন। এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে তথ্যসচিব, সংস্কৃতিবিষয়ক সচিব ও বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেওয়া হয়। ইতিপূর্বে দেওয়া স্বতঃপ্রণোদিত রুলের ধারাবাহিকতায় ওই আদেশ দেওয়া হয় সেদিন।