বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি-ইচ্ছুকদের কর্মসূচিতে লাঠিপেটার অভিযোগ, পুলিশের অস্বীকার

তিন দফা দাবিতে সোমবার ঢাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভের কর্মসূচি পালন করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের একটি অংশ
ছবি: প্রথম আলো

তিন দফা দাবিতে ঢাকায় আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশের লাঠিপেটার শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। তবে পুলিশ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

আজ সোমবার বেলা তিনটায় রাজধানীর সচিবালয় এলাকার ডিপিডিসি ভবনের সামনে এই ঘটনা ঘটে বলে দাবি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের। তাঁদের ভাষ্য, পুলিশের লাঠিপেটায় তিন থেকে চারজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজনকে পুলিশ আটক করেছে।

করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। পরীক্ষা না হওয়ায় জেএসসি, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার বিষয় ‘ম্যাপিং’ করে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের ফল মূল্যায়ন করা হয়। এতে সব পরীক্ষার্থীই পাস করেন। এর ফলে প্রতিযোগী বেশি হওয়ার আশঙ্কায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় আবেদনের যোগ্যতা (এসএসসি ও এইচএসসিতে প্রাপ্ত জিপিএ) এবার বাড়ানো হয়েছে। আবেদনের এই বর্ধিত শর্ত বাতিল করে আগের শর্ত বহাল রাখাসহ তিন দফা দাবিতে আজ রাজধানীতে আন্দোলনে নামে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের একটি অংশ।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় আগের জিপিএ বহাল, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় বিভাগ পরিবর্তন ইউনিট বহাল ও গুচ্ছ সিলেকশন বাতিল।

দাবিগুলো নিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সামনে থেকে মিছিল বের করেন। মিছিলটি শাহবাগে পৌঁছালে তাদের বাধা দেয় পুলিশ। পুলিশের অনুরোধে শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ না করে জাদুঘরের সামনে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

বেলা পৌনে দুইটার দিকে শিক্ষার্থীরা শাহবাগ থেকে মিছিল নিয়ে টিএসসি, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, দোয়েল চত্বর, শিক্ষা ভবন হয়ে সচিবালয়ের সড়ক দিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের দিকে যাচ্ছিলেন। ডিপিডিসি ভবনের সামনে তাঁদের বাধা দেওয়া দেয়। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, একপর্যায়ে তাঁদের ব্যাপক লাঠিপেটা করে পুলিশ। এতে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পুলিশ অন্তত চারজনকে আটক করে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা তাঁদের সমর্থন দেন। তাঁকেও আটক করা হয়েছে।

কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি-ইচ্ছুক শাহ আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা সচিবালয় ও ডিপিডিসির মাঝের রাস্তা দিয়ে প্রেসক্লাবের দিকে যাচ্ছিলাম। ডিপিডিসি ভবনের সামনে পুলিশ আমাদের আটকে দেয়। ১০-১৫ মিনিট মিছিলটি আটকে রাখার পর পুলিশ আমাদের লাঠিপেটা শুরু করে। এতে আমাদের তিন-চারজন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের রমনা জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, সচিবালয়ের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোনো লাঠিপেটা করা হয়নি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দু-তিনজনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।