ভাটারায় গৃহকর্মীকে নির্যাতন, গৃহকর্তা রিমান্ডে

কিশোরী গৃহকর্মীর পিঠে জখমের চিহ্ন।
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর ভাটারায় কিশোরী গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে এক দম্পতির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার গৃহকর্তা আসাদুর রহমানকে শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে ভাটারার জোয়ার সাহারা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই দিন রাতেই গৃহকর্মী কুলসুমা আক্তারের বোন ফাতেমা আক্তার ব্যাংক কর্মকর্তা আসাদুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী মাহফুজা রহমানকে আসামি করে ভাটারা থানায় মামলা করেন। মাহফুজা এখন পলাতক।

পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, শিশুটির কঙ্কালসার দেহে অসংখ্য নির্যাতনের চিহ্ন দেখলে গা শিউরে ওঠে। কাজে একটু ভুল হলেই নির্মম নির্যাতন করা হতো। জ্বলন্ত আগুনে লোহার খুন্তি ও রড গরম করে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছ্যাঁকা দেওয়া হতো।

ঠিকমতো খেতে দেওয়া হতো না। দরিদ্র মা–বাবা শিশুটিকে গৃহকর্মী হিসেবে আট মাস আগে কাজে পাঠিয়েছিলেন। আট মাস ধরেই শিশুটির ওপর নির্মম নির্যাতন করা হয়। গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রী দুজনই শিশুটির ওপর নির্যাতন করেছেন। বুধবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে শিশুটিকে পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরে শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, শিশুটির পরিবারের সদস্যরা ভাসানটেক এলাকার বস্তিতে থাকেন। অভাবের সংসার হওয়ার কারণে এক আত্মীয়ের মাধ্যমে শিশুটিকে কাজে দেয় পরিবারটি। এ ঘটনায় অভিযুক্ত একজনকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অপর অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, শিশুটিকে বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে পরিবারটি। তবে নির্যাতনের চিহ্ন থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশের অনুমতি নিয়ে শিশুটিকে ভর্তি করতে বলে। পুলিশের হস্তক্ষেপে শিশুটিকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটেও চিকিৎসা দেওয়া হয়। বর্তমানে শিশুটি পরিবারের হেফাজতে আছে।