ভোরে গাড়ি নিয়ে ঘোরেন তাঁরা, দিনে করেন ৪-৫টি ছিনতাই

ছিনতাইকারী দলের কাছ থেকে উদ্ধার করা অর্থ, মুঠোফোন ও ল্যাপটপ
ছবি: সংগৃহীত

ভারতীয় দুই মেডিকেল শিক্ষার্থীর লাগেজ ছিনতাইয়ের ঘটনায় একটি ডাকাত চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ। গতকাল শুক্রবার রাজধানী ও কেরানীগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ডাকাত দলের সদস্যরা হলেন মো. ফখরুল ইসলাম, মো. আলমাস, মো. সামুন, মো. আবদুল্লাহ আল ইউসুফ আহম্মেদ, মো. শাহিন, মো. বাবু ও মো. শফিকুল ইসলাম।

পুলিশ বলছে, ওই দুই শিক্ষার্থীর নাম শাহীল আহমেদ ও আসিফ ইকবাল। তাঁরা রাজধানীর মগবাজার এলাকার সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষার্থী। ২৩ জানুয়ারি ভোরে ছুটি কাটাতে দুই সপ্তাহের জন্য ভারতে যাওয়ার পথে ছিনতাইয়ের শিকার হন তাঁরা।

এ বিষয়ে আজ শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে ডিবির যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, ছিনতাইয়ের মামলা হলেও ঘটনাটি ঘটিয়েছিলেন ডাকাত চক্রের সদস্যরা। এই চক্রের মূল হোতা আবদুল্লাহ আল ইউসুফ আহমেদ। তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় আটটি মামলা রয়েছে।

এই গাড়ি নিয়ে করা হতো ছিনতাই
ছবি: সংগৃহীত

যেভাবে ছিনতাই

পুলিশ জানিয়েছে, একজন চিকিৎসকের গাড়িচালক রাতের জন্য গাড়ি ভাড়া দিয়েছিলেন ছিনতাই চক্রের সদস্য ফখরুল ইসলামকে। ২৩ জানুয়ারি হোস্টেল থেকে বিমানবন্দরে যাওয়ার সময় মগবাজারে একটি সাদা রঙের গাড়ি তাঁদের গতিরোধ করে। পরে মুখোশধারী ৪ জন গলায় চাপাতি ধরে তাঁদের সঙ্গে থাকা ১টি ট্রলি, ১টি হাতব্যাগ, ১টি ল্যাপটপ, ২টি মুঠোফোন, ৫৭ হাজার ভারতীয় রুপি ও সাড়ে ৭ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন।

ভারতীয় দুই মেডিকেল শিক্ষার্থীর লাগেজ ছিনতাইয়ের ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ
ছবি: সংগৃহীত

যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, চক্রের সদস্যরা সপ্তাহে এক দিন গাড়ি নিয়ে ছিনতাই করতে বের হন। যেদিন তাঁরা বের হন সেদিন তিন থেকে চারটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটান। তিনি বলেন, ছিনতাইকালে গাড়ির নম্বর প্লেট ঢেকে রাখা হয়, যাতে ধরা না পড়েন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গাড়িমালিককে চালক না জানিয়ে গাড়ি ভাড়া দিয়েছিলেন।

পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার ডাকাত দলের সদস্যদের কাছ থেকে ১৮টি মুঠোফোন, ১টি ল্যাপটপ ও ২টি চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে। এসবের মধ্যে একটি মুঠোফোন ও একটি ল্যাপটপ একজন মেডিকেল শিক্ষার্থীর। বাকিগুলোর মালিক খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

ভোরের ফাঁকা রাস্তায় টার্গেট খোঁজেন তাঁরা

সংবাদ সম্মেলনে ডিবি জানায়, ভোরে যখন রাস্তা ফাঁকা থাকে, তখন ছিনতাই করতে নামেন এই চক্রের সদস্যরা। বিশেষ করে, পুলিশের টহল দল নেই এমন স্থানকে ছিনতাইয়ের জন্য বেছে নেন তাঁরা। যাতে ছিনতাই করে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যেতে পারেন তাঁরা।

পুলিশের নজরদারি কম থাকার কারণে রাতে প্রায়ই এ ধরনের ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে এসব ঘটনা ঘটিয়ে থাকেন চক্রের সদস্যরা। টহল পুলিশ থাকে না এমন স্থানে এ ধরনের ঘটনা বেশি ঘটে।