ময়লা পানি, কাদা পেরিয়ে কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে তাঁদের

ড্রেনেজ ব্যবস্থা নষ্ট, সড়কে জমেছে পানি। ভোগান্তি সাধারণ মানুষের। পুরান ঢাকা
ছবি: আশিকুজ্জামান

বেসরকারি একটি ব্যাংকে কর্মরত রওশন আরা বেগমের কর্মস্থল রামপুরায়। তিনি থাকেন পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজার নন্দনাল লেনে। আজ সোমবার সকালে কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য বেরিয়ে গলির মুখেই দেখেন, বৃষ্টির পানি জমে রয়েছে। গলি পেরিয়ে সড়কেও একই দশা। বৃষ্টির মধ্যে রিকশা বা অন্য কোনো বাহন না পেয়ে নোংরা পানি পেরিয়ে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত যেতে হয় তাঁকে।
রওশন আরা প্রথম আলোকে বলেন, গলিতে ড্রেনের ময়লা জমে পানি প্রায়ই জমা হয়ে থাকে। কিছুদিন আগেও কাজ করা হয়েছে, তবে আজ আবার দেখি, পানি জমে রয়েছে। আর সড়কেও পানি।

রওশন আরা বলেন, সড়কের পাশেই সিটি করপোরেশনের কর্মীরা লক্ষ্মীবাজার এলাকার বর্জ্য জমা করে রাখে। ময়লাগুলো পানির সঙ্গে মিশে গেছে। উপায় না পেয়ে ময়লা পানি পেরিয়ে আসতে হলো। ময়লা পানিতে পা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পা চুলকানো শুরু হয়ে গেছে।

রাজধানীতে গতকাল রোববার সকাল থেকে আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে পুরান ঢাকার বেশ কয়েকটি গলি ও সড়কে বৃষ্টির পানি জমে যায়। ফলে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ও কর্মস্থলে যেতে শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষদের ভোগান্তি পোহাতে হয়।

স্থানীয় লোকজন বলছেন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় এই ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। পাশাপাশি কয়েকটি সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে ওয়াসার নতুন পানির পাইপ বসানোর কাজ করায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা এখন অনেকটাই নষ্ট।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লক্ষ্মীবাজার সুভাষ বোস অ্যাভিনিউয়ের দুটি অংশে পানি জমে রয়েছে। এর মধ্যে শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ থেকে সূত্রাপুরে যাওয়ার পথে আশপাশে কোনো ফুটপাত না থাকায় পথচারীদের ময়লা পানি পেরিয়েই চলতে হচ্ছে। সড়ক দিয়ে ভারী যানবাহন চলার সময় পানি ছিটকে পথচারীদের গায়ে পড়ছে। আর শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ থেকে লক্ষ্মীবাজার পথে ফুটপাতেও পানি ওঠার উপক্রম। বৃষ্টির মধ্যে সড়কটিতে যানবাহন চলাচলও কম। পাশাপাশি বেশ কিছু অলিগলিতেও পানি জমে ছিল।

সকালে মিজানুর রহমান তাঁর দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলেকে নিয়ে বেরিয়েছিলেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘শীতের মধ্যে ছেলে যেন বৃষ্টিতে না ভেজে, তাই তাকে এগিয়ে দিতে এসেছিলাম। পরে সড়কে নোংরা পানি দেখে ছেলেকে কোলে নিয়ে নিজেই পানি পার করে দিই। সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্ত থাকায় পড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়ে গিয়েছিল। একে তো সংস্কার ছাড়া এ রকম সড়ক, তার ওপর আজ পানি জমেছে।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আনিসুল হক বলেন, ‘ক্যাম্পাসের পাশেই বাসা থাকায় একটু দেরি করেই বেরিয়েছিলাম। বাসা থেকে বেরিয়ে দেখি, সড়কে পানি জমেছে। শীতের মধ্যে জুতা-মোজা ভিজে গেছে। এখন সারা দিন ক্যাম্পাসে এসব নিয়েই থাকতে হবে।’