মসজিদে জঙ্গিবাদের কুফল নিয়ে বয়ানের আহ্বান ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর

মো. ফরিদুল হক খান
ছবি: সংসদ সচিবালয়ের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

ধর্মপ্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেছেন, পবিত্র জুমার নামাজের দিন ইমাম ও খতিবরা মসজিদে জঙ্গিবাদের কুফল নিয়ে আলোচনা করলে দেশে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস থাকবে না।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ষষ্ঠ তলার মিলনায়তনে ‘সহিংসতা ও চরমপন্থা বিষয়ে ইসলামিক বিজ্ঞজনদের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান এ কথা বলেন। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, গ্রাম, গঞ্জ ও শহরে সবাই মসজিদের ইমামের পেছনে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেন। মসজিদের ইমাম ও খতিবরা জুমার নামাজের দিন জঙ্গিবাদের কুফল দিকগুলো নিয়ে যদি বয়ান দেন, তাহলে দেশে আর জঙ্গিবাদ থাকবে না।

ইসলামে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের জায়েজ নেই—বয়ানে তাও তুলে ধরতে হবে। একই সঙ্গে বাল্যবিবাহ ও মাদকের কুফল নিয়ে আলোচনা করতে হবে। সবদিক থেকে এসবের মূল আলোচনার কেন্দ্রস্থল হবে মসজিদ।

অনুষ্ঠানের মূল বক্তা সিটিটিসির প্রধান ও ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, শুধু শক্তি, মামলা-মোকাদ্দমা, জেল-জরিমানা ও ফাঁসি দিয়ে জঙ্গিবাদ পুরোপুরি দমন করা সম্ভব নয়। জঙ্গিবাদ এখন বৈশ্বিক সমস্যা। সাম্প্রতিক দিনগুলোয় ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে ধর্মকে ব্যবহার করে কিছুসংখ্যক লোক সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে ধর্মের ক্ষতি হচ্ছে, ইসলামের ক্ষতি হচ্ছে। সারা বিশ্বের মুসলমানরা এই ক্ষতির শিকার হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যেসব জঙ্গি ধরা পড়েছে, তারা জামায়াতে ইসলামী বা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সঙ্গে জড়িত। জঙ্গিনেতা সাইদুর রহমান জেলা জামায়াতের আমির ছিলেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলেম–ওলামাদের উদ্দেশে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সময় আপনাদের বলেছেন, জঙ্গিবাদ দমনে মসজিদের ইমাম–খতিবদের শক্তিশালী ও কার্যকর ভূমিকা পালনে সুযোগ রয়েছে। কারণ, ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে জঙ্গিবাদে আকৃষ্ট করা হচ্ছে। সেই সঠিক ব্যাখ্যাটা আপনার দিতে পারেন। এখানে আপনাদের মুখ্য ভূমিকা রয়েছে। শিশু শিক্ষার জন্য প্রথম দায়িত্ব মা-বাবা ও শিক্ষকের।

এরপর ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব আপনাদের। সে জন্য আপনাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসলাম সম্পর্কে যার গভীর জ্ঞান আছে, সে কখনো জঙ্গিবাদে জড়িত হতে পারে না। আপনারা একসঙ্গে কাজ করলে জঙ্গিবাদের শিকড় উৎপাটন করা সহজ।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ধর্মসচিব মো. নুরুল ইসলাম। এতে সভাপতিত্ব করেন ইসলামি ফাউন্ডেশনের মহাসচিব মো. আনিস মাহমুদ।

মধ্যাহ্নবিরতির পর অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া আলেমা–ওলামাদের নিয়ে সিটিটিসির কর্মশালা শুরু হয়।