মাতৃভাষায় শিক্ষার অধিকারের দাবিতে বর্ণমালা মিছিল

আমতলার গেটে সমাবেশ শেষে বাংলা, চাকমা, মারমা, আরবি বিভিন্ন ভাষার বর্ণমালা নিয়ে একটি মিছিল বের হয়
ছবি: প্রথম আলো

সর্বস্তরে মাতৃভাষার প্রচলন ও মাতৃভাষায় শিক্ষার অধিকারের দাবিতে বর্ণমালা মিছিল করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আমতলী গেটের সামনে এই দাবিতে সমাবেশ করে ছাত্রসংগঠনটি।

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে ছাত্র ইউনিয়নের সহসভাপতি কে এম মুত্তাকী বলেন, এই ভূখণ্ড যেমন বাঙালিদের, তেমনি ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষেরও। কিন্তু বর্তমানে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার পরিচয় মুছে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি শাসনামলে যেমন করে বাঙালিদের ওপর সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চালানো হয়েছে, এখনো ঠিক তেমনি ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষের ওপর আগ্রাসন চালানো হচ্ছে।

সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক সুমাইয়া সেতু বলেন, বায়ান্নতে যে চেতনা ধারণ করে পূর্বসূরিরা ভাষা আন্দোলন করেছিলেন, সেই চেতনা থেকে বহু দূরে সরে এসেছে বাংলাদেশ। সরকার প্রাথমিক পর্যায়ে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর পাঁচটি মাতৃভাষা শিক্ষার সুযোগ তৈরি করেছে। কিন্তু মাতৃভাষা শিক্ষা এবং মাতৃভাষায় শিক্ষা এক বিষয় না। তিনি বলেন, সব ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মাতৃভাষায় শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে অফিস-আদালত ও উচ্চশিক্ষায় বাংলা চালু করতে হবে।

ছাত্র ইউনিয়নের সহকারী সাধারণ সম্পাদক খায়রুল হাসান বলেন, পর্যটনশিল্পের ছোঁয়ায় যে পাহাড়গুলোতে একজন পর্যটক স্বর্গীয় সুবাস পান, সেখানে সেই পাহাড়ের ভূমিপুত্ররা খুঁজে পায় ভিটেমাটি হারানোর ইতিহাস, ঘর পুড়ে যাওয়ার দুঃসহ যন্ত্রণা এবং উদ্বাস্তু হওয়ার কঠিন অভিজ্ঞতা। সেখানে সংস্কৃতির বিকাশ কতটা ভয়াবহ, সেটা সহজে অনুমানযোগ্য।

সমাবেশ থেকে সব ভাষায় শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত, সর্বস্তরে মাতৃভাষা চালু ও বর্ণমালা সংরক্ষণের দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষের ওপর চলমান সাংস্কৃতিক আগ্রাসন রুখে দেওয়ার প্রত্যয় জানানো হয়।

আমতলার গেটে সমাবেশ শেষে বাংলা, চাকমা, মারমা, আরবি বিভিন্ন ভাষার বর্ণমালা নিয়ে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি দোয়েল চত্বর, হাইকোর্ট মোড় ও কদম ফোয়ারা ঘুরে প্রেসক্লাবে এসে শেষ হয়। পরে প্রেসক্লাবের সামনে একই দাবিতে সমাবেশ করে ছাত্রসংগঠনটি।