‘মাননীয় মন্ত্রী, কন্যাশিশু নির্যাতন কেন বন্ধ হচ্ছে না?’

জাতীয় কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় শিশুদের সঙ্গে অনলাইন সভার আয়োজন করা হয়
ছবি: সংগৃহীত

‘মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়, কন্যাশিশু নির্যাতন কেন বন্ধ হচ্ছে না?’ এক অনলাইন সভায় মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরাকে এই প্রশ্ন করে এক শিশু। একই সভায় সব কন্যাশিশুর পথচলা নিরাপদ করতে আইনের প্রয়োগ সম্পর্কে জানতে চায় আরেক শিশু।

জাতীয় কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় শিশুদের সঙ্গে এই অনলাইন সভার আয়োজন করা হয়। ভার্চ্যুয়াল এই সভার যৌথ আয়োজক মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর ও জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম। সভায় প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরাকে শিশুদের নিরাপত্তা, অধিকার, শিক্ষাবিষয়ক নানা প্রশ্ন করে শিশুরা। শিশুদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন প্রতিমন্ত্রী।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, কন্যাশিশু নির্যাতন রোধে পরিবার থেকেই সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। মা-বাবা যেন ধর্ষণকারী সন্তান বর্জন করেন, বোন যেন ধর্ষণকারী-নির্যাতকারী ভাইকে বর্জন করেন।

প্রতিমন্ত্রী জানান, সরকার নারী ও শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। নারী নির্যাতনে জড়িত ব্যক্তির দলীয় পরিচয় যা-ই হোক না কেন, কোনো ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।

সভায় বলা হয়, ২০১৭ সালের আদমশুমারি অনুসারে দেশে কন্যাশিশুর সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি। এই শিশুদের ভবিষ্যতের পথচলা নিশ্চিত করতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সব স্তরের মানুষকে সম্মিলিতভাবে সোচ্চার হতে হবে। নির্যাতনের কোনো ঘটনার কথা কেউ জেনে থাকলে হেল্পলাইন ১০৯-এ নাম-পরিচয় গোপন রেখে যে কেউ ফোন করে তথ্য দিতে পারেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পারভীন আকতার। সূচনা বক্তব্য দেন জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফরিদা পারভীন, যুগ্ম সচিব মো. মুহিবুজ্জামান, নারী নির্যাতন প্রতিরোধে মন্ত্রণালয়ের মাল্টিসেক্টরাল কর্মসূচির প্রকল্প পরিচালক আবুল হোসেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান চেমন আরা তৈয়ব। সভা সঞ্চালনা করেন জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সদস্য রাজিয়া সুলতানা।

মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফরিদা পারভীন বলেন, নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে সরকারের সবগুলো যন্ত্র সক্রিয় হয়ে ব্যবস্থা নেয়। নির্যাতনের পাশাপাশি অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আটক ও শাস্তির বিষয়গুলোও সমানভাবে প্রকাশ হওয়া উচিত।

জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান চেমন আরা তৈয়ব বলেন, পরিবার থেকে কন্যাশিশুর সমতা ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। কারণ একটি শিশুর শৈশবই হচ্ছে তার ভিত্তি।

নারী নির্যাতন প্রতিরোধে মাল্টিসেক্টরাল কর্মসূচির প্রকল্প পরিচালক আবুল হোসেন বলেন, কোনো এলাকায় নির্যাতনের একটি ঘটনা ঘটলেও যেন সাহায্য চেয়ে কেউ না কেউ হেল্পলাইনে ফোন করেন। নির্যাতন দেখেও চুপ করে থাকার সংস্কৃতি থেকে সবাইকে বেরিয়ে আসতে হবে।

৩০ সেপ্টেম্বর জাতীয় কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর আয়োজিত রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশুদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয় অধিদপ্তর কার্যালয় থেকে।