মালয়েশিয়ায় শ্রমিক রপ্তানিতে ‘সিন্ডিকেট’ ভাঙার দাবি

মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন বায়রা নেতারা
ছবি: সংগৃহীত

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে দেশের সব বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সিকে শ্রমিক পাঠানোর সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন সম্মিলিত সমন্বয় ফ্রন্ট (বায়রা)। মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠাতে সিন্ডিকেট প্রথা ভেঙে দেওয়ারও দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় বায়রা। প্রায় তিন বছর বন্ধ থাকার পরে গত ১৯ ডিসেম্বর শ্রমিক নেওয়ার বিষয়ে মালয়েশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। ওই সমঝোতায় কী রয়েছে, তা এখনো সরকার প্রকাশ করেনি। সংবাদ সম্মেলনে তা প্রকাশের দাবি জানায় বায়রা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ ফারুক। তিনি বলেন, এর আগে ২০১৬ সালে মালয়েশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের জিটুজি প্লাস চুক্তি করা হয়েছিল। ওই চুক্তির শর্ত ছিল, কোন কোন রিক্রুটিং এজেন্সি শ্রমিক রপ্তানি করবে, তা নির্ধারণ করবে মালয়েশিয়া সরকার। এবারও সেই শর্ত জুড়ে দেওয়া হবে, এমনটা আশঙ্কা করছেন তাঁরা।

মোহাম্মদ ফারুক বলেন, ২০১৬ সালের চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে ১৫ লাখ শ্রমিক নেওয়ার কথা ছিল মালয়েশিয়ার। কিন্তু তিন বছরে ২ লাখ ৭৫ হাজার শ্রমিক রপ্তানির পর দুর্নীতির অভিযোগে চুক্তিটি স্থগিত করে মালয়েশিয়া সরকার। বাংলাদেশি ১০টি এজেন্সি ওই শ্রমিক রপ্তানির সঙ্গে জড়িত ছিল।

বায়রা সভাপতির লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়, একটি সিন্ডিকেট দুই দেশের নীতিনির্ধারকদের ম্যানেজ করে ১০টি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে শ্রমিক রপ্তানির অনুমতি আদায় করেছিল। এবার সেই সিন্ডিকেট সদস্যদের সঙ্গে আরও কয়েকজন যুক্ত হয়েছে। তাঁরা ২৫টি এজেন্সির মাধ্যমে নতুন করে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে শ্রমিক রপ্তানির চেষ্টা করছে।

এ সময় সংগঠনটির মহাসচিব মোস্তফা মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের কাছে মনে হচ্ছে, মালয়েশিয়ার সঙ্গে এই চুক্তি রাতের অন্ধকারে চুরি চুরি ভাব করে হয়েছে। মালয়েশিয়ার রাজধানী আছে, সেখানে হয়নি; ওদের মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় আছে, সেখানে হয়নি।

কেন হোটেলে হবে? সেই হোটেলে আরও অনেকে অবস্থান করেছেন বলে আমরা শুনেছি। যাঁরা অতীতে সিন্ডিকেট করেছেন, সেই সিন্ডিকেট নেতারাও হোটেলে অবস্থান করেছে। মন্ত্রী মালয়েশিয়ায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সেখানে তাঁকে এই সিন্ডিকেটের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে। মন্ত্রী স্পষ্টভাবে কোনো জবাব দিতে পারেননি।’

সংবাদ সম্মেলনে বায়রা অভিযোগ করে, মধ্যপ্রাচ্যের যে রুটে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা বিমানভাড়া ছিল। এক বছরের ব্যবধানে তা বেড়ে এক লাখ টাকার ওপরে চলে গেছে। বিমানের কিছু কর্মকর্তা, বিদেশি এয়ারলাইনস ও দেশীয় কিছু ট্রাভেল এজেন্সির সমন্বয়ে গঠিত সিন্ডিকেট বিমানের ভাড়া নিয়ন্ত্রণ করছে।

বিমানের টিকিটের মূল্যবৃদ্ধির জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবু সালেহ্ মোস্তফা কামালকে দায়ী করেন বায়রা সভাপতি মোহাম্মদ ফারুক। তিনি বলেন, ‘টিকিটের মূল্যবৃদ্ধির হোতা হলো বাংলাদেশ বিমান। বাংলাদেশ বিমানের এমডি এর জন্য দায়ী। তিনি এই সিন্ডিকেট করছেন।’ দ্রুত বিমানের এমডি পদ থেকে আবু সালেহ্ মোস্তফা কামালকে অপসারণের দাবি জানান তিনি।