মেডিকেলের প্রশ্নপত্র ফাঁসের অন্যতম হোতা সালাম গ্রেপ্তার: সিআইডি

গ্রেপ্তার হওয়া আবদুস সালাম। তাঁকে সোমবার রাজধানী থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানায় সিআইডি
ছবি: প্রথম আলো

সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের অন্যতম হোতাকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

আজ মঙ্গলবার ঢাকায় সিআইডি কার্যালয় মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়।

সিআইডি বলছে, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির নাম আবদুস সালাম। তাঁকে গতকাল সোমবার রাজধানীর বনশ্রী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি জানায়, আবদুস সালাম স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রেসের মেশিনম্যান ছিলেন। ২০০৬ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত বেশ কয়েকটি ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে তাঁর সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে।

আবদুস সালামকে আজ আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানাবে সিআইডি।

আবদুস সালাম সম্পর্কে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের বিশেষ সুপার এস এম আশরাফুল আলম বলেন, প্রেস থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে সালাম তাঁর খালাতো ভাই জসিমকে দিতেন। জসিমের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছিল।

আবদুস সালামকে ২০০৬-২০০৯ সাল পর্যন্ত এক দফা প্রশ্ন ছাপার কাজ থেকে সরিয়ে রাখা হয়েছিল। এক প্রশ্নের জবাবে আশরাফুল আলম বলেন, কীভাবে সালাম আবার প্রেসের কাজ ফিরে পেলেন, সে সম্পর্কে তাঁরা নিশ্চিত নন। এ ব্যাপারে খোঁজখবর চলছে।

আশরাফুল আলম বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় কমপক্ষে পাঁচজন চিকিৎসক ও তিন থেকে চারটি কোচিং সেন্টারের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

এক প্রশ্নের জবাবে আশরাফুল আলম বলেন, সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সাবেক পরিচালক আবদুল হান্নানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।

২০১৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে তদন্ত শুরু করে সিআইডি। ওই সময় মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসেরও তথ্য পায় তারা। এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় আবদুস সালামসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।

একটি খুনের মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি হওয়ায় আবদুস সালামকে ২০১৫ সালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে। সিআইডি বিভিন্ন জায়গায় আবদুস সালামের স্থাবর সম্পত্তির খোঁজ পেয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

এর আগে আবদুস সালামের খালাতো ভাই জসিমের ৩৮টি ব্যাংক হিসাব থেকে ২১ কোটি ২৭ লাখ ও তাঁর স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব থেকে ৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকার সন্ধান পাওয়া যায়। সিআইডি বলছে, মেডিকেলের ভর্তি মৌসুমে এই টাকার লেনদেন হয় বলে তারা নিশ্চিত হয়েছে।