রাইড শেয়ারিংয়ে চলতে পারবে ১১৫৬টি মোটরসাইকেল

ফাইল ছবি

রাইড শেয়ারিং সেবার আওতায় আবারও মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। তবে এর জন্য কিছু শর্ত পালন করতে হবে। প্রথমত, কেবল রাইড শেয়ারিং সেবা চালানোর সনদপ্রাপ্ত মোটরসাইকেলই চলতে পারবে। মানতে হবে নির্দিষ্ট কতগুলো স্বাস্থ্যবিধি।

ইতিমধ্যে এ–সংক্রান্ত নির্দেশনা বিআরটিএ থেকে রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলোতে গেছে। তবে এই সেবা এখন শুধু ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় চালু থাকবে। চট্টগ্রাম কিংবা অন্য কোনো শহরে মোটরসাইকেলসেবা চালু করার অনুমতি দেওয়া হয়নি।

বিআরটিএর নির্দেশনা অনুসারে, রাইড শেয়ারিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যেগুলোর বিআরটিএ থেকে এনলিস্টমেন্ট সনদ রয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে। পাশাপাশি প্রতিটি মোটরসাইকেলের আলাদা এনলিস্টমেন্ট সনদ থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে সব কটি রাইড শেয়ারিং কোম্পানির ১ হাজার ১৫৬টি মোটরসাইকেলের এনলিস্টমেন্ট সনদ আছে। অর্থাৎ এই সনদধারী মোটরসাইকেলের বাইরে অন্য মোটরসাইকেল রাইড শেয়ারিং সেবার অ্যাপ ব্যবহার করে যাত্রী পরিবহন করতে পারবে না। সনদপ্রাপ্ত মোটরসাইকেলগুলো শুধু ঢাকা যানবাহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) এলাকায় চলতে পারবে। ডিটিসিএ এলাকার মধ্যে রয়েছে—ঢাকা মহানগর ও গাজীপুর মহানগর; ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও গাজীপুর জেলা। অবশ্যই চালক ছাড়া মাত্র একজন যাত্রী পরিবহন করতে হবে।

রাইড শেয়ারিং সেবার মোটরসাইকেল চালানোর ক্ষেত্রে চালক ও যাত্রীদের কতগুলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। এগুলো হচ্ছে—১. চালক ও যাত্রীকে মাস্ক, ফেসশিল্ড, হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। চালক ও যাত্রীদের হাত জীবাণুমুক্ত করার জন্য পর্যাপ্ত স্যানিটাইজার রাখতে হবে। ২. যাত্রী ও চালককে অবশ্যই আলাদা দুটি গুণগত মানসম্মত হেলমেট পরতে হবে। প্রতিটি যাত্রার শুরু ও শেষে স্প্রে করে হেলমেট জীবাণুমুক্ত করতে হবে। ৩. যাত্রার শুরু ও শেষে মোটরসাইকেল পরিষ্কার করাসহ জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। এ ছাড়া মোটরসাইকেলের চালক যাত্রীর হাতব্যাগে জীবাণুনাশক ছিটিয়ে জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে।
এ ছাড়া রাইড শেয়ারিং সেবা পরিচালনার সনদসহ সব ধরনের দলিল সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেল চালানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সহজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মালিহা এম কাদির প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা শুক্রবার থেকেই কার্যক্রম শুরু করেছেন। তবে বিআরটিএর সব শর্ত মানার জন্য কিছুটা সময় দরকার। পাঠাও ও তাঁর প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে সময় চেয়ে বিআরটিএতে চিঠি দিয়েছেন। তিনি বলেন, বিআরটিএর পোর্টালের মাধ্যমে এনলিস্টমেন্ট সনদ গ্রহণ করতে হয়। এই পোর্টালে কারিগরি কিছু জটিলতা আছে। এ জন্য সময় বেশি লাগে। ফলে চাহিদার তুলনায় খুব কম মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি পেল।

করোনা পরিস্থিতির কারণে গত ২৬ মার্চ থেকে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। সেদিন থেকে রাইড শেয়ারিং সেবাও বন্ধ হয়ে যায়। ১ জুন থেকে বাস-মিনিবাস সীমিতভাবে চলাচল শুরু করে।

২১ জুন রাইড শেয়ারিং সেবার অধীনে শুধু এনলিস্টমেন্ট সনদধারী গাড়ি চালানোর অনুমতি দেয় বিআরটিএ। তখন পর্যন্ত ২৫৫টি গাড়ি চলাচলের মতো ছিল। পর্যায়ক্রমে সনদ নেওয়া গাড়ির সংখ্যা বেড়েছে এবং তা সেবায় যুক্ত হয়েছে। এবার মোটরসাইকেল চলাচল শুরুর অনুমতি এল। গাড়ির মতো মোটরসাইকেলও এনলিস্টমেন্ট সনদ পেলে রাস্তায় চালানোর স্বয়ংক্রিয় অনুমোদন পেয়ে যাবে বলে বিআরটিএ সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, পর্যায়ক্রমে চট্টগ্রামসহ অন্য শহরগুলোতেও রাইড শেয়ারিং সেবার আওতায় মোটরসাইকেল চালানোর অনুমতি দেওয়া হবে। এই বিষয়ে কথাবার্তা চলছে। তবে এ ক্ষেত্রেও মূল শর্ত সংশ্লিষ্ট মোটরসাইকেলের এনলিস্টমেন্ট সনদ লাগবে।

রাইড শেয়ারিং সেবার নীতিমালা অনুসারে গাড়ির এনলিস্টমেন্ট সনদের ফি ১ হাজার ও মোটরসাইকেলের জন্য ৫০০ টাকা নির্ধারিত আছে। প্রতিবছর সনদ নবায়ন করতে হয়।
জানতে চাইলে বিআরটিএর চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কি না, যাত্রী পরিবহনে নিয়োজিত মোটরসাইকেলের এনলিস্টমেন্ট সনদ থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে আছে। শর্ত না মানলেই জরিমানা গুনতে হবে।