রাইড শেয়ারের চালকদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা রাইড শেয়ারিং ড্রাইভারস ইউনিয়নের মানববন্ধনছবি: সাইফুল ইসলাম

পুলিশি হয়রানি বন্ধ, অ্যাপসনির্ভর শ্রমিকদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতিসহ ছয় দফা দাবি জানিয়েছে ঢাকা রাইড শেয়ারিং ড্রাইভারস ইউনিয়ন। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এই দাবি জানানো হয়। মানববন্ধনে বলা হয়, রাইড শেয়ারের চালকদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে।

মানববন্ধনে ঘোষণা দেওয়া হয়, দাবির ব্যাপারে এক সপ্তাহের মধ্যে সরকারকে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। তারপরও দাবি আদায় না হলে আবার রাজপথে নামতে বাধ্য হবেন রাইড শেয়ারের চালকেরা।

গতকাল সোমবার রাজধানীর বাড্ডায় শওকত আলী নামের এক রাইডার তাঁর মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন। তার আগে ট্রাফিক সার্জেন্ট এসে শওকতের কাগজপত্র নিয়ে যান। মামলা না দেওয়ার জন্য শওকত পুলিশের কাছে অনুরোধ করেন। তিনি গাড়ির কাগজপত্র ফেরত চান। কিন্তু কাগজপত্র ফেরত না পেয়ে হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়ে নিজের মোটরসাইকেলে আগুন দেন শওকত।

এ ঘটনার প্রতিবাদে পুলিশি হয়রানি বন্ধসহ ছয় দফা দাবিতে গতকাল দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দেয় অ্যাপভিত্তিক ড্রাইভারস ইউনিয়ন অব বাংলাদেশ।

কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন রাইড শেয়ারের চালকেরা। মানববন্ধন থেকে ছয় দফা দাবি জানান ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বেলাল আহমেদ।

দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে অ্যাপসনির্ভর শ্রমিকদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি, কর্ম-সময়ের মূল্য দেওয়া, সব ধরনের রাইডে কমিশন ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা, মিথ্যা অজুহাতে কর্মহীন করা বন্ধ করা। পাশাপাশি পার্কিংয়ের জায়গা নির্ধারণ, তালিকাভুক্ত রাইড শেয়ারকারী যানবাহনকে গণপরিবহনের আওতায় নিয়ে আগাম কর কেটে রাখা বন্ধের দাবি জানানো হয়।

প্রেসক্লাবের সামনে সকাল ১০টায় মানববন্ধন শুরু হয়। কর্মসূচি চলে তিন ঘণ্টা। কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে রাইড শেয়ারের চালকেরা বিভিন্ন স্লোগান দেন। ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম এবং সিলেটেও এই কর্মসূচি পালিত হয়।

মানববন্ধনে ছয় দফা দাবি জানান অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারের চালকেরা
ছবি: সাইফুল ইসলাম

মানববন্ধনে বলা হয়, রাইড শেয়ারের চালকের বাইক পুড়িয়ে ফেলা তাঁরা সমর্থন করেন না। কিন্তু কোনো বাইকার কোন পরিস্থিতিতে এমন কাজ করতে বাধ্য হলেন, তা সরকারকে খতিয়ে দেখার আহ্বান জানানো হয়।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া বাইকাররা বলেন, তাঁদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। উবারসহ বিভিন্ন কোম্পানি তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। তারা বেশির ভাগ টাকা কেটে নিচ্ছে। ফলে বাইকারদের সংসার চালাতে কষ্ট হয়। তাই তাঁরা বাধ্য হয়ে ২৪ ঘণ্টার কর্মবিরতির কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

আজ রাত ১২টায় কর্মবিরতি শেষ হলে সবাইকে কাজে ফিরে যেতে মানববন্ধন থেকে আহ্বান জানানো হয়।