রাস্তায় বেরিয়েছেন অনেকে, হাতে বাজারের ব্যাগ

ফাইল ছবি।

ঢাকায় ‘সর্বাত্মক লকডাউনের’ তৃতীয় দিনে আজ শুক্রবার রাস্তায় তুলনামূলক বেশি যানবাহন ও মানুষের চলাচল দেখা গেছে। সকালে মোহাম্মদপুর, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার এলাকায় রিকশা, মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার বেশি দেখা গেছে। অনেকেই বের হয়েছেন বাজার করতে।

মোহাম্মদপুরে রাস্তা দিয়ে বাজারের ব্যাগ হাতে যাচ্ছিলেন মোহাম্মদ চুন্নু মিয়া। তিনি বললেন, ‘অফিস বন্ধ, তাই একটু ঘুরতে বের হয়েছি। দূরে আমার একটা সবজি বাগান আছে। সেখান থেকে শাক নিয়ে আসলাম।’

কারওয়ান বাজার ও এর আশপাশের সড়কগুলোতে বাজারের ব্যাগ হাতে বেশি মানুষ দেখা গেছে। অনেককে বাজারের ব্যাগ হাতে ফুটপাত ধরে আসা-যাওয়া করতে দেখা গেছে।

অফিস বন্ধ, তাই একটু ঘুরতে বের হয়েছি। দূরে আমার একটা সবজি বাগান আছে। সেখান থেকে শাক নিয়ে আসলাম।
চুন্নু মিয়া

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন নারী ট্রাফিক সার্জেন্ট প্রথম আলোকে বলেন, ‘লকডাউন যেমন হওয়া উচিত, তেমন হচ্ছে না। তিন ঘণ্টার পাসের কারণে লোক বেশি বের হচ্ছে। মোটামুটি সব গাড়িরই মুভমেন্ট পাস আছে। রমজান মাস। বেশির ভাগই বাজারের জন্য বের হচ্ছে।’

অ্যাপসভিত্তিক মোটরসাইকেল সেবা বন্ধ থাকার পরও রাস্তায় যাত্রী পরিবহনে বের হয়েছেন সুমন মিয়া। মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ মোড়ে (তিন রাস্তা মোড়) মোটরসাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি।

সুমন মিয়া বলেন, ‘ওষুধ কিনতে যাচ্ছিলাম। ভাবলাম ভাড়া নিয়ে যাই। তাই এখানে দাঁড়ালাম।’

তবে প্রয়োজনে যাঁরা বের হয়েছেন এবং ব্যক্তিগত পরিবহন নেই, তাঁদের গন্তব্যে পৌঁছাতে বেশ ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে।

‘লকডাউন যেমন হওয়া উচিত, তেমন হচ্ছে না। তিন ঘণ্টার পাসের কারণে লোক বেশি বের হচ্ছে। মোটামুটি সব গাড়িরই মুভমেন্ট পাস আছে। রমজান মাস। বেশির ভাগই বাজারের জন্য বের হচ্ছে।’
ট্রাফিক সার্জেন্ট

বেসরকারি একটি হাসপাতালে ইন্টার্ন ফার্মাসিস্ট হিসেবে কাজ করছেন রাফিজা পারভীন। ফার্মগেট মোড় থেকে হেঁটে গ্রিন রোডের দিকে যাচ্ছিলেন। তিনি বললেন, ‘হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। আইডি কার্ড দেখলেও মাঝেমধ্যে পুলিশ ছাড়ছে না। রিকশাও আটকে দিচ্ছে। এখন হেঁটে অফিসে যাচ্ছি। পুলিশ বলে অফিসের গাড়িতে যাতায়াত করতে। কিন্তু এত স্টাফের জন্য গাড়ি দেওয়া হাসপাতালের পক্ষে সম্ভব না।’
আনোয়ার হোসেনকেও ফার্মগেট মোড়ে রিকশার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। মিরপুরে সাড়ে ১১ নম্বরের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন তিনি। লকডাউনের জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি শিল্পকারখানাও খোলা রাখা হয়েছে।

অফিসের কাজেই আনোয়ার যাত্রাবাড়ী যাচ্ছেন। তিনি বললেন, ‘মিরপুর থেকে ফার্মগেট আসতে তিনবার রিকশা বদলেছি। ২৫০ টাকা খরচ হয়েছে এখন পর্যন্ত। খুবই ঝামেলায় আছি।’

গত দুই দিনে প্রয়োজনে রাস্তায় বের হওয়ায় পরও ট্রাফিক পুলিশ কিছু কিছু ক্ষেত্রে হেনস্তা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনাও হয়েছে। অনেকে এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে তৃতীয় দিনে সড়কের চিত্র কিছুটা পাল্টেছে। কেউ প্রয়োজনে, কেউ অপ্রয়োজনে, কাউকে জীবিকার তাগিদে বের হতে দেখা গেছে।