রিমান্ড শেষে চিকিৎসক মামুনসহ দুজন কারাগারে

আদালত

পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুল করিম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার চিকিৎসক আবদুল্লাহ আল মামুন ও ফাতেমা আক্তারকে আজ শুক্রবার ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হলে শুনানি শেষে বিচারক তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের রেজিস্ট্রার আবদুল্লাহ আল মামুনকে দুদিন ও আদাবরের মাইন্ড এইড অ্যান্ড সাইকিয়াট্রি অ্যান্ড অ্যাডিকশনের অন্যতম মালিক ফাতেমা আক্তারকে চার দিনের রিমান্ড শেষে আজ ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে নেওয়া হয়। শুনানি শেষে আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠিয়ে দেন। ১৫ নভেম্বর ফাতেমা খাতুনের চার দিন এবং ১৭ নভেম্বর আবদুল্লাহ আল মামুনের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীদুজ্জামান আজ প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুল করিম হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে রিমান্ড শেষে ১২ জনকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মাইন্ড এইডের অন্যতম মালিক নিয়াজ মোর্শেদ পুলিশ পাহারায় আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে চিকিৎসাধীন। চারজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এজাহারভুক্ত এক আসামি বিদেশে আছেন। বাকি দুজন দেশে আত্মগোপনে আছেন। তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

মানসিক সমস্যায় ভুগে আদাবরে মাইন্ড এইড অ্যান্ড সাইকিয়াট্রি অ্যান্ড অ্যাডিকশন নামের বেসরকারি হাসপাতালে ৯ নভেম্বর ভর্তি হন পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুল করিম। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, ভর্তির পরপর হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাঁকে মারধর করে হত্যা করেন। সেই ভিডিও ভাইরাল হয়। পরে মাইন্ড এইড হাসপাতালের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে চারজন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে বলেছেন, আনিসুল করিমকে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল থেকে মাইন্ড এইড হাসপাতালে পাঠিয়েছিলেন আবদুল্লাহ আল মামুন। আবার মাইন্ড এইডে মারধরে পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুল অচেতন হয়ে পড়লে মামুন সেই হাসপাতালে ছুটে আসেন। পরে অচেতন মামুনকে তিনি অ্যাম্বুলেন্সে করে জাতীয় হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে নিয়ে যান। আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে প্রদত্ত তথ্যের ভিত্তিতে মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর দুদিন আগে গ্রেপ্তার করা হয় মাইন্ড এইডের অন্যতম মালিক ফাতেমা আক্তারকে।

৩১তম বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান আনিসুল করিম। সর্বশেষ তিনি বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) ট্রাফিকের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাঁর বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়ায়। তিনি এক সন্তানের জনক। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের ৩৩ ব্যাচের ছাত্র ছিলেন তিনি।