লকডাউন, রমজানে বাড়তি সবজির দাম

কয়েক দিন আগের ৪০ থেকে ৫০ টাকার সবজি এখন বিক্রি হচ্ছে দেড় থেকে দুই গুণ বাড়তি দামে।

লকডাউন ও রমজানে বাজারে সবজির দাম অনেকটাই বেশি। সবজি কিনতে দরদামে ব্যস্ত ক্রেতারা। গতকাল রাজধানীর কাপ্তান বাজারে
ছবি: প্রথম আলো

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেট কাঁচাবাজার থেকে গতকাল শুক্রবার সকালে এক কেজি করে বেগুন আর শসা কেনেন গৃহিণী শারমিন সুলতানা। দোকানদার তাঁর কাছে বেগুনের দাম রাখেন ১০০ আর শসা ১২০ টাকা। আরও ১২০ টাকায় তিনি এক কেজি বেসন কেনেন।

শারমিন সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে বাইরের তৈরি ইফতারি নিরাপদ মনে হয় না। তাই ঘরেই ইফতারি বানানোর চিন্তা করে বাজারে এসেছি। কিন্তু ভাবতেও পারিনি, গত সপ্তাহে কেনা ৩০-৩৫ টাকার বেগুনের দাম এখন ১০০ টাকা হয়েছে।’

ধানমন্ডির রায়েরবাজার, মোহাম্মদপুরের কাঁটাসুর ও কৃষি মার্কেট কাঁচাবাজারে গিয়ে দেখা যায়, ইফতারি তৈরিতে যেসব সবজি বেশি লাগে, সেগুলোর দাম যেন হঠাৎ বেড়ে গেছে। যেসব সবজি কয়েক দিন আগেও বাজারে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে, সেগুলো এখন দেড় থেকে দুই গুণ বাড়তি দামে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

এদিকে লকডাউন হলেও গতকাল বাজারের সবজি বিক্রির অংশে ক্রেতাদের ভিড় ছিল। লকডাউনের আগে যাঁরা শুকনা পণ্য—চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ কিনে রেখেছেন, তাঁদের অনেকেই গতকাল শাকসবজি কিনতে বাজারে আসেন।

তবে বাজারে অনেককে স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। বিশেষ করে ব্যবসায়ীদের এ ব্যাপারে উদাসীন দেখা গেছে। ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলতে হয়, গরম লাগে—এমন নানা অজুহাতে ব্যবসায়ীদের অনেককে মাস্ক পরতে দেখা যায়নি। এ ছাড়া মূল স্থান থেকে কাঁচাবাজার স্থানান্তর করা হলেও ভিড়ের কারণে বাজারে আসা ক্রেতাদের শারীরিক দূরত্ব মানতে দেখা যায়নি।

কৃষি মার্কেটের সবজি ব্যবসায়ী রিয়াজ উদ্দিন প্রতি কেজি বেগুন ১০০ টাকা, শসা ১২০ টাকা আর কাঁচা মরিচ ৮০ টাকায় বিক্রি করেন। তিনি বলেন, ‘পাইকারি বাজারে দাম বাড়ার কারণে আমাদেরও বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’

বেলা সাড়ে ১১টায় রায়েরবাজারে গিয়ে দেখা যায়, ছোলা প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ক্ষীরা ৫০-৬০ টাকা, আলু ২০-২৫ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। আর অ্যাংকর ডালের বেসন ৬০ থেকে ৭০ টাকা এবং বুটের ডালের বেসন ১১০-১২০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। এক কেজি দেশি মসুর ডাল রাখা হচ্ছে ১১০ টাকা। এই বাজারেও শসা, বেগুন আর কাঁচা মরিচের দাম রাজধানীর অন্য বাজারের মতোই চড়া।

একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, লকডাউনের কারণে ঢাকায় কাঁচামালের সরবরাহ কম। পরিবহন খরচও অনেক বেড়ে গেছে। এসব কারণে দাম আগের চেয়ে একটু বেশি। কিন্তু ক্রেতারা বলছেন, সবজির দাম অনেক বেড়ে গেছে। কোনো কোনো সবজির দাম আগের চেয়ে দেড় থেকে দুই গুণ বেড়ে গেছে।

বিকেলে কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বরবটি, পটোল, করলা, ঢ্যাঁড়স, লতি, চিচিঙ্গার মতো সবজিগুলো প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১৫-২০ টাকার টমেটো এখন ৪০ টাকা কেজি। আর বাজারে নতুন আসা ঝিঙের প্রতি কেজির দাম ৮০ টাকা হাঁকছেন বিক্রেতারা।