শহীদ মিনারের কাছে ওই কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যা: পুলিশ

লাশ
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর শহীদ মিনার এলাকায় ওই কিশোরীকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার আসামি আবুল খায়ের রিমান্ডের সময় জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য জানিয়েছেন বলে পুলিশের ভাষ্য। এদিকে মেয়ের হত্যাকারীর ফাঁসি দাবি করেন নিহত কিশোরীর মা।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কমল কৃষ্ণ সাহা প্রথম আলোকে বলেন, শহীদ মিনারে কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় জড়িত আসামি আবুল খায়েরকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে আবুল খায়ের জানান, দীর্ঘদিন ধরে তিনি শহীদ মিনার, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকার ফুটপাতে বসবাস করে আসছেন। তিনি ওই কিশোরীকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন।

কিশোরীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে ও মামলার নথিপত্রের তথ্য বলছে, ওই কিশোরী তার মায়ের সঙ্গে হাজারীবাগ এলাকায় বসবাস করত। গত শনিবার দুপুরে সে তার এক বান্ধবীর সঙ্গে শহীদ মিনার এলাকায় আসে। দিনভর ঘোরাঘুরি শেষে তারা যখন আবার হাজারীবাগে ফিরে যাচ্ছিল, তখন পূর্বপরিচিত দুজন বান্ধবীর সঙ্গে তাদের দেখা হয়। তারা রাত আড়াইটার দিকে আবার শহীদ মিনার এলাকায় আসে। একপর্যায়ে এক বান্ধবীর সঙ্গে কথা–কাটাকাটি হয়। এতে ওই কিশোরী শহীদ মিনারের বেদির কাছাকাছি গিয়ে বসে থাকে। অন্য তিন বান্ধবী সামনের দিকে চলে যায়। এই সুযোগে আবুল খায়ের ওই কিশোরীকে শহীদ মিনার সংলগ্ন তেলশা মাজারের পেছনে নিয়ে ধর্ষণ করে শ্বাসরোধ করে ফেলে রাখেন।

নিহত কিশোরীর মা প্রথম আলোকে বলেন, মেয়েকে যখন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না, তখন তার বান্ধবীরা খোঁজাখুঁজি শুরু করে। একপর্যায়ে শহীদ মিনারের পেছনে গিয়ে তারা তাঁর মেয়েকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পায়। তখন আসামি খায়ের সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে মারধর করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
শাহবাগ থানা–পুলিশ আদালতকে এক প্রতিবেদন দিয়ে বলছে, আসামি আবুল খায়ের শহীদ মিনার এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ভাসমান হিসেবে বসবাস করে আসছেন। প্রায়ই শহীদ মিনার এলাকায় আসা অল্পবয়সী তরুণীদের উত্ত্যক্ত করতেন তিনি।

নিহত কিশোরীর মা জানালেন, তাঁর স্বামীর সঙ্গে এক বছর ধরে সম্পর্ক নেই। তিনি এক মেয়ে আর দুই ছেলেকে নিয়ে হাজারীবাগ এলাকায় বসবাস করে আসছিলেন। সেখানকার একটি কারখানায় তিনি চাকরি করে সংসার চালান। অর্থের অভাবে মেয়েকে স্কুলে দিতে পারেননি। ছোটবেলায় তার মেয়ে শহীদ মিনার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ফুল বিক্রি করত। তবে কয়েক বছর ধরে সে ফুল বিক্রি করত না। তিনি তাঁর মেয়ের হত্যাকারীর দ্রুত ফাঁসি দাবি করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কমল কৃষ্ণ সাহা বলেন, আবুল খায়ের নিয়মিত মাদক সেবন করেন। তাঁর বাড়ি পটুয়াখালী। কেন তিনি ওই কিশোরীকে হত্যা করেছেন, সে বিষয়টি তদন্ত হচ্ছে। তদন্ত শেষে দ্রুত আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন