শাবিপ্রবির ঘটনায় তদন্ত হচ্ছে, পুলিশ দায়ী থাকলে ব্যবস্থা: ডিআইজি হায়দার

১৬ জানুয়ারি পুলিশ লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়
ফাইল ছবি

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হয়রানি বা হামলার অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে দায়ীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সদর দপ্তরের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি- অভিযান, গণমাধ্যম ও পরিকল্পনা) মো. হায়দার আলী খান। তিনি জানান, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

পুলিশ সপ্তাহ ২০২২ উপলক্ষে চতুর্থ দিনের অধিবেশন নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে মো. হায়দার আলী খান এসব কথা বলেন। আজ বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর রাজারবাগ মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

পুলিশ সপ্তাহ ২০২২ উপলক্ষে চতুর্থ দিনের অধিবেশন নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাব দেন মো. হায়দার আলী খান
ছবি: সংগৃহীত

শাবিপ্রবির আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অর্থ দিয়ে সহায়তা করার অভিযোগে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক কয়েকজন শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ সেখানে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাত দিন পর অনশন ভাঙিয়েছেন অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘আমিও ১০ হাজার টাকা দিলাম। পারলে পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করুক।’ এমন পরিস্থিতিতে আন্দোলনকারীদের অর্থসহায়তার অভিযোগে তাঁদেরও পুলিশ গ্রেপ্তার করবেন কি না জানতে চাইলে ডিআইজি হায়দার আলী খান বলেন, এটি তদন্তের বিষয়। তদন্ত যাঁরা করছেন, তদন্তে যদি অভিযোগ পাওয়া যায়, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তাহলে কি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান বিব্রতকর পরিস্থিতি সম্পর্কে পুলিশ সদর দপ্তর অবগত নয়—এক সাংবাদিকের করা এ প্রশ্নের জবাবে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এখানে বিব্রতকর পরিস্থিতি কি না, তা পুলিশের বলার কিছু নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বতন্ত্র কিছু নিয়মকানুন আছে। তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ রয়েছে। পুলিশ শুধু ল অ্যান্ড অর্ডার ম্যানেজমেন্ট দেখে। তা-ও বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনের আমন্ত্রণেই পুলিশ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত হয়।

১৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়টির বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অসদাচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে তাঁর পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী। ১৬ জানুয়ারি বেলা পৌনে তিনটার দিকে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে অবরুদ্ধ করে রাখেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। উপাচার্য তাঁর কার্যালয় থেকে বের হয়ে ডিনদের এক সভায় যাওয়ার সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে পড়লে তাঁর সঙ্গে থাকা শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাঁকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে আশ্রয় নেন। পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ওই ভবনের প্রধান ফটক অবরুদ্ধ করে স্লোগান দিতে শুরু করেন। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে পুলিশ উপাচার্যকে মুক্ত করতে ভবনের ভেতরে ঢুকতে চাইলে আন্দোলনকারীরা বাধা দেন। তখন বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে পুলিশ ২৭টি রাবার বুলেট ও ২১টি সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ার পাশাপাশি লাঠিপেটা করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে উপাচার্যকে মুক্ত করে তাঁর বাসভবনে নিয়ে আসে। পরে এই আন্দোলন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রূপ নেয়।

আরও পড়ুন

এদিকে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীদের অর্থসহায়তা দেওয়ার অভিযোগে গত মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রাক্তন পাঁচ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে সিলেটে নেওয়া হয়। আজ সন্ধ্যায় তাঁরা জামিন পান।

আরও পড়ুন