সরকার ক্ষমতা হারানোর ফোবিয়াতে ভুগছে: নুরুল হক

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধনে বক্তব্য দেন ডাকসুর সাবেক সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর
ছবি: আহমেদ দীপ্ত

সরকার ক্ষমতা হারানোর ফোবিয়াতে (আতঙ্কে) ভুগছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধের নামধারী সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় বিজয়ের মাসে শ্রমিক, শিক্ষক ও আইনজীবীদের ওপর রাতের আঁধারে হামলা হয়। এটি ৪৯ বছরে এসে স্বাধীনতার জন্য লজ্জাজনক ঘটনা। সরকার কারও কথা শুনতে চায় না। তারা ক্ষমতা হারানোর ফোবিয়াতে ভুগছে। ঐক্যবদ্ধ হলে এই স্বৈরশাসন আর টিকতে পারবে না।

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এক বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধনে এসব কথা বলেন নুরুল হক। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে রাতের আঁধারে শ্রমিক–শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে এই সমাবেশের আয়োজন করে ছাত্র-যুব-শ্রমিক অধিকার পরিষদ।

সমাবেশে ডাকসু ভিপি বলেন, পুলিশ ন্যক্কারজনকভাবে গভীর রাতে আন্দোলনরত শিক্ষক–শ্রমিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এই হামলা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ২৫ মার্চ রাতের কথা মনে করিয়ে দেয়। যখন কেউ দাবি নিয়ে রাজপথে আসে, তখনই সরকার ভাবে, এই বুঝি গদি নড়বড়ে হলো। এই আতঙ্কে সরকার মানুষের কণ্ঠকে দমন করতে চায়। কালাকানুন করে সংবাদপত্রের কণ্ঠ বন্ধ করতে চায়। এভাবেই সরকার বাংলাদেশকে একনায়কতন্ত্র রাষ্ট্র বানাতে চায়।

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার ঘটনায় নুরুল হক বলেন, ভাস্কর্য নিয়ে সরকারি দল এবং আলেম-ওলামারা একটি মুখোমুখি অবস্থানে এসেছে। এটি দেশের জন্য অশনিসংকেত। সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট করতে পরিকল্পিতভাবে এই ভাস্কর্য ভাঙচুর চালানো হয়েছে। সমাজে ইসলামবিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে। এই বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ ক্ষমতাসীন দল। ক্ষমতায় থাকতে তারা ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে, ধর্মীয় সহিংসতার পটভূমি বানাচ্ছে। তিনি বলেন, কুষ্টিয়াতে যারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙেছে, তাদের বিচার করতে হবে। এ ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে। পাশাপাশি শ্রমিকদের ওপরে যে নির্বিচারে হামলা হয়েছে, সেটিরও বিচার করতে হবে।

বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, ‘হামলা–মামলা দিয়ে ছাত্র–যুবসমাজকে দমানো যাবে না। বঙ্গবন্ধু শিখিয়েছেন নিপীড়িত মানুষের পাশে কীভাবে দাঁড়াতে হয়। সভা–সমাবেশ করতে দিন, কথা বলতে দিন। রাজনৈতিক অধিকার আমাদের সংবিধান দিয়েছে।’

আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক আবু হানিফ বলেন, স্বাধীন দেশে নাগরিকের দাবি তুলে ধরার, প্রতিবাদ করার অধিকার আছে। অথচ পুলিশ হামলা চালাচ্ছে। এসব পুনরাবৃত্তি যেন না হয়। জনগণের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা চলছে।

যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান বলেন, দুই দিন আগে জারি হয়েছে, সমাবেশের আগে অনুমতি নিতে হবে। ভোররাতে শিক্ষক ও শ্রমিকদের ওপর পুলিশ বাহিনী হামলা চালিয়েছে। যারা এগুলো করেছে, তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান ও গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলবে মানুষ।

বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মশিউর রহমান, শ্রমিক অধিকারের সদস্যসচিব আরিফ হোসেন, শ্রমিকনেতা আবদুর রহমান প্রমুখ সমাবেশে বক্তব্য দেন।