সাম্প্রদায়িক অপশক্তি নির্মূল করতে না পারাটা আমাদের দুর্বলতা: তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ
ফাইল ছবি

স্বাধীনতার এত বছরেও দেশ থেকে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি নির্মূল করতে না পারাটা নিজেদের দুর্বলতা বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আজ রোববার সকালে আওয়ামী লীগের পক্ষে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যাঁরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করেন না, সেই সাম্প্রদায়িক অপশক্তি এখনো বিষবাষ্প ছড়ায়। এখনো আমাদের ভাষা, কৃষ্টি ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে তাঁরা কথা বলেন ও আস্ফালন করেন। স্বাধীনতার ৫০ বছরেও দেশ থেকে তাঁদের নির্মূল করতে না পারাটা আমাদের দুর্বলতা। মহান শহীদ দিবসে আমাদের অঙ্গীকার হচ্ছে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি, যাঁরা ভাষা, কৃষ্টি ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে মাঝেমধ্যে আস্ফালন করেন, তাঁদের নির্মূল করা। সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলনের জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আজকের দিনে আমাদের লক্ষ্য, বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।’

মানুষের মুক্তচিন্তা ও বাক্‌স্বাধীনতার প্রশ্নে বাসদ ও বিএনপির নেতাদের অভিযোগের প্রসঙ্গে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে বিষোদ্‌গার করেই বলা হচ্ছে, তাঁরা কথা বলতে পারেন না। আমাদের বিরুদ্ধে কথা বলেই বলছেন, কথা বলতে পারেন না। এতেই প্রমাণিত হয়, আসলে তাঁরা যত দরকার, তার চেয়ে বেশি কথা তাঁরা প্রতিদিন বলেন।’

হাছান মাহমুদ আরও বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারির পথ ধরেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতাসংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল।

পাকিস্তান সৃষ্টির আগেই ১৯৪৭ সালে যখন উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার আলোচনা চলছিল, তৎকালীন তরুণ ছাত্রনেতা শেখ মুজিবুর রহমান তখন বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি করেছিলেন। ঢাকায় ১৯৪৮ সালের ১১ জানুয়ারি যে আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া হয়েছিল, সেই কর্মসূচি সফল করতে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে প্রথম বৈঠক হয়েছিল। সেই বৈঠকের পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জানুয়ারি তিনি গ্রেপ্তার হন। ১৫ জানুয়ারি মুক্তিলাভের পর তাঁর নেতৃত্বে ছাত্রসমাবেশ হয়েছিল এবং ১৯৪৯ থেকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত তিনি কারাগারে ছিলেন। কারাগারে থাকাকালে মাতৃভাষা আন্দোলনের জন্য তিনি সেখানে অনশন করেছিলেন। এই ইতিহাসটা অনেকে জানেন না।

এর আগে গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে একুশের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে শহীদ মিনারে ফুল দেন তাঁদের সামরিক সচিবেরা। রাত সোয়া ১২টার দিকে সর্বসাধারণের জন্য শহীদ মিনার উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। আজ রোববার ভোর থেকে বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি ফুল দিতে আসতে থাকেন শহীদ মিনারে।

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানাতে আজ সকালে শহীদ মিনারে আসেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়াসহ বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা।