সেদিন রাতে আমিনবাজারে যা ঘটেছিল

আমিনবাজারে ৬ ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা মামলার রায় আজ বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেছেন আদালত
ফাইল ছবি

২০১১ সালের ১৭ জুলাই পবিত্র শবে বরাতের রাতে সাত বন্ধু ঘুরতে গিয়েছিলেন ঢাকার অদূরে সাভারের আমিনবাজারের বড়দেশী গ্রামে। দিবাগত রাত সোয়া একটার দিকে স্থানীয় কিছু দুর্বৃত্ত সাত ছাত্রকে ডাকাত বলে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে। এতে ছয় ছাত্র মারা যান। একজন প্রাণে বাঁচেন। ১০ বছর আগের এই হত্যা মামলার রায় আজ বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেছেন ঢাকা জেলার দ্বিতীয় অতিরিক্ত দায়রা জজ ইসমত জাহান। রায়ে ১৩ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২৫ জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

সেদিনের ঘটনায় শামস রহিম, তৌহিদুর রহমান, ইব্রাহিম খলিল, কামরুজ্জামান, টিপু সুলতান ও সিতাব জাবির প্রাণ হারান। গুরুতর আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান আল-আমিন। ২০১৬ সালে তিনি আদালতে সাক্ষ্য দেন। আদালতে আল-আমিনের দেওয়া সাক্ষ্য ও প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেদিনের ঘটনার বিবরণ পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন

আল-আমিন ২০১৬ সালের মে মাসে প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ২০১১ সালের ১৭ জুলাই পবিত্র শবে বরাতের রাতে তিনিসহ সাত বন্ধু দারুস সালাম এলাকার একটি মসজিদে নামাজ পড়তে যান। নামাজ পড়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাঁরা মসজিদ থেকে বের হন। দিবাগত রাত ১২টার দিকে তাঁরা বিরিয়ানি খেতে গাবতলীর দিকে যান। কিন্তু বিরিয়ানি না পেয়ে তাঁরা হাঁটতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁরা হাঁটতে হাঁটতে আমিনবাজারের বড়দেশী গ্রামে পৌঁছান। রাত সোয়া একটার দিকে হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টি থেকে বাঁচতে তাঁরা এলাকাটির একটি কুঁড়েঘরে আশ্রয় নেন। আচমকা একদল লোক ডাকাত বলে তাঁদের ওপর হামলা চালায়।

আল-আমিন প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘হঠাৎ একদল লোক আমাদের চোখে টর্চলাইট ধরে জানতে চায়, আমরা কোথা থেকে এসেছি। আমরা ছাত্র পরিচয় দিয়ে দারুস সালাম থেকে ঘুরতে এসেছি জানালে তারা আমাদের বলে, “তোরা ডাকাত”। এরপর সবাই আমাদের মারতে শুরু করে।’

আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে আল-আমিন বলেছিলেন, বাঁচার আকুতি জানালেও আসামিরা তাঁদের মারধর করেই যাচ্ছিলেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ডাকাত নই, আমরা ছাত্র—এটা বলার পরও আসামিরা আমাদের ছাড়েনি। আমাদের মারধর করেছে।’