সৌদিতে বাংলাদেশি কিশোরীর মৃত্যু: রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক আটক

অভিযান শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন র‍্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু। ফকিরাপুল, ঢাকা, ১৭ সেপ্টেম্বর
সংগৃহীত ছবি

রাজধানীর ফকিরাপুলের একটি রিক্রুটিং এজেন্সির (নিয়োগকারী সংস্থা) মালিকসহ দুজনকে বৃহস্পতিবার আটক করেছে র‌্যাব। সৌদি আরবে নির্যাতনে বাংলাদেশি এক কিশোরীর মৃত্যুর ঘটনায় নিজ কার্যালয় থেকে তাঁদের আটক করা হয়।

আটক দুজন হলেন মেসার্স এমএইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মালিক মকবুল হোসাইন ও তাঁর সহযোগী পারভেজ আহমেদ। মারা যাওয়া কিশোরীর নাম উম্মে কুলসুম (১৪)। সে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার নূরপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের মেয়ে।

পরিবারের সদস্যদের অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে ফকিরাপুলে এমএইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের কার্যালয়ে অভিযান শুরু করে র‌্যাব। এতে নেতৃত্ব দেন র‍্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু।

অভিযান চলাকালে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে পলাশ কুমার বসু প্রথম আলোকে বলেন, এমএইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের বিরুদ্ধে মোট দুটি অভিযোগ রয়েছে র‌্যাবের কাছে। অপর অভিযোগটি দিয়েছে তানিয়া আক্তার নামের এক নারীর পরিবার। তিনিও এই রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে ২০১৮ সালে সৌদি আরবে যান। বেতন দেওয়ার কথা ছিল ৫০ হাজার টাকা। তা দেওয়া হয়নি। উল্টো মারধর করে তাঁর হাত-পা ভেঙে দেওয়া হয়। দুই অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে অভিযান চালায় র‌্যাব। এ সময় মালিক মকবুল হোসাইন ও তাঁর সহযোগী পারভেজকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন।

র‍্যাব সূত্র জানায়, রাজ্জাক মিয়া নামের স্থানীয় এক দালালের সঙ্গে পরিচয় হয় উম্মে কুলসুমের। তিনি ৩০ হাজার টাকা নিয়ে ১৭ মাস আগে ওই কিশোরীকে এমএইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে সৌদি আরবে পাঠান। বয়স ১৪ বছর হলেও ৩০ বছর দেখিয়ে কুলসুমকে বিদেশে পাঠানো হয়েছিল। সৌদিতে গিয়ে একটি বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করে সে। কাজ শুরুর পর থেকেই তার ওপর নানা ধরনের নির্যাতন শুরু করেন গৃহকর্তা। বিষয়টি জানতে পেরে মেয়েকে ফিরিয়ে আনার জন্য রিক্রুটিং এজেন্সির সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করে পরিবার। কিন্তু তারা কোনো সহযোগিতা করেনি। চার মাস আগে গৃহকর্তা ও তাঁর ছেলে মিলে কুলসুমের দুই হাঁটু, কোমর ও পা ভেঙে দেন। কিছুদিন পর একটি চোখ নষ্ট করে কুলসুমকে রাস্তায় ফেলে দেন তাঁরা। সৌদি আরবের পুলিশ তাকে উদ্ধার করে কিং ফয়সাল হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৯ আগস্ট মারা যায় কুলসুম। ১১ সেপ্টেম্বর রাতে লাশ ঢাকায় পৌঁছায়।