সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে কেন ব্যর্থ, প্রশ্ন ইলিয়াস কাঞ্চনের

ইলিয়াস কাঞ্চন
ইলিয়াস কাঞ্চন

রাজধানীর নর্দ্দায় বাসচাপায় এক শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আন্দোলনের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন। গত বছরের জুলাইয়ে কুর্মিটোলায় দুই বাসের রেষারেষিতে দুই শিক্ষার্থী নিহতের পর আবার বেপরোয়া বাসচাপায় শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে সংশ্লিষ্টদের ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে ইলিয়াস কাঞ্চন এ প্রশ্ন তোলেন।

বিবৃতিতে ইলিয়াস কাঞ্চন প্রশ্ন রেখে বলেন, চালকদের মানসিকতা পরিবর্তন করার দায়িত্ব যাঁদের, তাঁরা কেন এত উদাসীন? তাঁরা কেন চালকদের দক্ষতা ও সচেতনতার প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন না? কেন চালকেরা পাল্টাপাল্টিভাবে বেপরোয়া গাড়ি চালানোর মানসিকতা পোষণ করেন? এই জায়গাগুলোতে যাঁদের কাজ করার কথা, তাঁরা কেন সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানে পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। তাঁদের অবহেলার কারণেই আজকে সড়কে রক্ত ঝরছে। এ জন্য তাঁরাই দায়ী।

অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, সড়কে চালকদের সুশৃঙ্খলভাবে গাড়ি চালানোর মানসিকতা সৃষ্টি করতে হবে। তাঁদের মানবিক ও সচেতন করতে হবে। তবে আমি গভীর উদ্বেগের সঙ্গে বলতে চাই, এ বিষয়গুলো সমাধানের দায়িত্ব যাঁদের, তাঁরা আজকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিচ্ছেন না। এ কারণে চালকদের বেপরোয়া মনোভাব নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। আর সে কারণেই সড়কে রক্ত ঝরছে, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে।

ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, গত বছর নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের দাবি ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের যে ১৭ দফা নির্দেশনা ছিল, তার দৃশ্যত পদক্ষেপ সে সময় সাময়িকভাবে নিতে দেখা গেলেও এখন আর সেগুলোর বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নিতে দেখা যাচ্ছে না। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য বিশেষ করে শহরে যান চলাচলের ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কেন আইনের কঠোর প্রয়োগ ঘটাতে পারছে না, এ ক্ষেত্রে সমস্যা কোথায়, এসব ত্রুটি কেন এত দিনেও চিহ্নিত করা যায়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। একই সঙ্গে সড়ককে দুর্ঘটনামুক্ত করতে বিদ্যমান আইনে কোনো ফাঁকফোকর আছে, নাকি আইন প্রয়োগে গলদ আছে, তা খুঁজে বের করার ওপর জোর দেন তিনি। চালকদের বেপরোয়া গাড়ি চালানোর মানসিকতা পরিবর্তনে উদ্যোগ গ্রহণ করে তাদের আরও মানবিক হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানান ইলিয়াস কাঞ্চন।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটায় বিইউপিতে ক্লাস ছিল আবরারের। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি। ক্লাসে যাওয়ার জন্য সকাল সাড়ে সাতটার দিকে নর্দ্দায় যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা বিইউপির বাসে উঠতে যাচ্ছিলেন তিনি। এ সময় সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাস তাঁকে চাপা দেয়। তিনি বাসের চাকায় পিষ্ট হন। পরে তাঁর লাশ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

দুর্ঘটনার পর যমুনা ফিউচার পার্কের সামনের রাস্তা অবরোধ করেন আবরারের সহপাঠী, বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। তাঁরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে স্লোগান দেন। পরে প্রগতি সরণির দুই পাশের সড়ক অবরোধ করেন বিইউপিসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। তাঁরা আট দফা দাবি তুলে ধরেন এবং নিরাপদ সড়কের দাবিতে স্লোগানও দেন।