হাজারীবাগে বাণিজ্যিক ভবন, আবাসন প্রকল্প না পার্ক?

এই দুঃসহ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার পথে হাজারীবাগবাসী। তাঁরা এখন চান পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা l প্রথম আলো
এই দুঃসহ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার পথে হাজারীবাগবাসী। তাঁরা এখন চান পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা l প্রথম আলো

হাজারীবাগ ট্যানারি পুরোপুরি সরানোর পর সেখানকার প্রায় ৬০ একর জায়গায় পরিবেশবান্ধব বাণিজ্যিক ভবন, সরকারি আবাসন প্রকল্প অথবা পার্ক বা উদ্যান করার চিন্তা মাথায় নিয়ে এগোচ্ছে শিল্প মন্ত্রণালয়। একাধিক বিকল্প উপস্থাপনের পর প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশনা দেবেন, তার আলোকেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকার এ জায়গায় কী করবে, তা চূড়ান্ত হলে গণপূর্ত অধিদপ্তর, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), সিটি করপোরেশন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে প্রস্তুত আছে।

যোগাযোগ করা হলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, এখনো কিছু চূড়ান্ত হয়নি, তবে এখানে কোনো না কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। সরকার তেজগাঁও শিল্প এলাকাকে বাণিজ্যিক এলাকায় রূপান্তর করছে। হাজারীবাগ ট্যানারি এলাকা নিয়েও সে রকম পরিকল্পনা রয়েছে। তবে কিছুই এখনো চূড়ান্ত হয়নি। 

শিল্পসচিব বলেন, হাজারীবাগে বাণিজ্যিক ভবন বা সরকারি আবাসন প্রকল্প হতে পারে। আবার পার্কও গড়ে তোলা হতে পারে। সবই চিন্তাভাবনার পর্যায়ে আছে। তবে যা-ই হবে, তা হবে পরিবেশবান্ধব। প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ-বিষয়ক পরিকল্পনা জমা দেওয়ার পর তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ীই সবকিছু চূড়ান্ত হবে।

এ বিষয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের (পিডব্লিউডি) ঢাকা অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী জিয়াউল হাফিজ প্রথম আলোকে বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হলে গণপূর্ত অধিদপ্তর তা বাস্তবায়ন করতে পারে। শিল্প মন্ত্রণালয় যদি হাজারীবাগ ট্যানারির জায়গায় কোনো প্রকল্প করার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে পিডব্লিউডি একটি মাস্টারপ্ল্যান করে স্থাপত্য ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে নকশা তৈরির পর তা বাস্তবায়ন করতে পারে।

তবে যেহেতু এটা অনেক বড় জায়গা, তাই সেখানে আবাসন প্রকল্প করাই শ্রেয় বলে পিডব্লিউডির কর্মকর্তারা মনে করেন। তাঁদের মতে, সেখানে যেহেতু আগে থেকেই বসতি গড়ে উঠেছে, তাই আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সহজ। পাশে বেড়িবাঁধ (পশ্চিমাঞ্চলীয় বাঁধ) সড়ক রয়েছে, যোগাযোগব্যবস্থা ভালো।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) বোর্ড সদস্য (উন্নয়ন) আবদুর রহমান বলেন, রাজউক যেহেতু পরিকল্পিত আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে, এখানেও তা করতে পারে। আবাসন প্রকল্প ছাড়া অন্য কিছু করতে বলা হলে তা-ও সম্ভব। শিল্প মন্ত্রণালয় চাইলে রাজউক অবশ্যই এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।

আবার নাজিমউদ্দিন রোডের সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারের জায়গায় বিনোদন পার্ক প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। হাজারীবাগে বিনোদন পার্ক করা হলে ঢাকা সিটি করপোরেশনও তা করতে চায়।

শিল্পসচিব বলেন, আগে প্রকল্প চূড়ান্ত হোক। তারপর ঠিক করা যাবে কোন বিভাগের মাধ্যমে কাজ হবে।