১৫ ও ২১ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের মূল কুশীলব ছিলেন পিতা-পুত্র

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। ঢাকা, ২৫ আগস্ট
ছবি: প্রথম আলো

১৯৭৫–এর ১৫ আগস্ট ও ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের মূল কুশীলব যথাক্রমে জিয়াউর রহমান ও তাঁর ছেলে তারেক রহমান ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। তিনি বলেন, ২৯ বছরের ব্যবধান হলেও এ দুটি ঘটনার মধ্যে প্রচুর মিল আছে।

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আজ বুধবার বেলা একটার দিকে এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

‘১৫ আগস্ট এবং ২১ আগস্ট নৃশংস হত্যাকাণ্ড: জেনারেল জিয়া থেকে তারেক জিয়া’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত ইসলামী জোট।
সভায় লিখিত বক্তব্যে শামসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ’৭৫–এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের নাম মুছে ফেলা। একইভাবে ২১ আগস্ট ঘটনার মূল উদ্দেশ্য ছিল ১৫ আগস্টে বেঁচে যাওয়া বঙ্গবন্ধুকন্যাকে হত্যা করা।

সাবেক এই বিচারপতি বলেন, এই দুটি হত্যাকাণ্ডের হত্যাকারীদের রক্তের মিল আছে। এ দুটি ঘটনার মূল কুশীলব ছিল পিতা-পুত্র। এই দুই ঘটনায় রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ব্যবহার করা হয়েছে দাবি করে শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ১৫ আগস্টের ষড়যন্ত্র ছিল সে সময়ের প্রতিষ্ঠিত সরকারের বিরুদ্ধে আর ২১ আগস্টের ষড়যন্ত্র ছিল সরকারের প্রতিষ্ঠিতদের দ্বারা যেখানে প্রশাসনযন্ত্রকে ব্যবহার করা হয়েছে সরকারি নির্দেশে। এই উভয় দিবসেই কিছু লোক অন্য একটি দেশের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করেছে গোপনে।

দুটি ঘটনাতেই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীদের অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখ করে সাবেক এই বিচারপতি বলেন, ২১ আগস্টের হামলার ঘটনায় বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীরা অংশ নিয়েছিলেন বলে বিচারিক আদালতই বলেছেন। আর ১৫ আগস্টের ঘটনায় বেশ কয়েকজন মন্ত্রী অংশ নিয়েছিলেন। তিনি আরও বলেন, ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডে কুশীলব মন্ত্রীরা আওয়ামী লীগের সদস্য হলেও পরে জানা যায়, তাঁরা শুরু থেকে পাকিস্তানপ্রেমী, অর্থাৎ বিএনপি-জামায়াত আদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন। ১৫ আগস্টের আগেই দেশি-বিদেশি যড়যন্ত্রকারীরা ঘাপটি মেরে থাকা মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় পদে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছিল। একইভাবে ২১ আগস্টের আগে বিএনপি-জামায়াত সরকার মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের ডিজিএফআই, এনএসআই এবং পুলিশ প্রধান পদে পদায়ন করেছিল।

শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, স্বাধীনতাবিরোধীরা এখনো তাদের ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে বিরামহীন গতিতে। তাদের থামানো নাগরিকদের দায়িত্ব।
বাংলাদেশ সম্মিলিত ইসলামী জোটের সভাপতি জিয়াউল হাসানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন প্রমুখ।