আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের পর ইনকিলাব মঞ্চের তিন প্রস্তাব

রোববার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে সংবাদ সম্মেলনে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদীছবি: প্রথম আলো।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি তিনটি প্রস্তাব তুলে ধরেছে ইনকিলাব মঞ্চ। রোববার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে এক সংবাদ সম্মেলনে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদী এ প্রস্তাবগুলো তুলে ধরেন।

এই তিন প্রস্তাব হলো প্রথমত দুটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা। প্রথম ট্রাইব্যুনাল ব্যক্তির বিচার করবে। দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল দলের বিচার করবে। দ্বিতীয়ত, অনেক আওয়ামী লীগের সমর্থক রয়েছে, যারা কোনো অপরাধের সঙ্গে যুক্ত নয়। এদের নিয়ে অনেকে মামলা–বাণিজ্য করে। এদের জন্য একটা ‘তওবা কমিশন’ গঠন করার মাধ্যমে তাদের দায়মুক্তি দিতে হবে। তৃতীয়ত, আগামী ৩৬ জুলাইয়ের (৫ আগস্ট) মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রদান করা।

এ সময় শরিফ ওসমান হাদী সরকারের প্রতি এক সপ্তাহের মধ্যে ৫০ হাজার নতুন পুলিশ নিয়োগের আহ্বানও জানান। তিনি বলেন, ‘বিসিএসে এত বছর যত নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, সব আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের সুপারিশে হয়েছে। সেই আওয়ামী পুলিশরা কি এখন আওয়ামী লীগকে ধরবে? বাংলাদেশে এত যুবক বেকার। আপনারা এই ১০ মাসে নতুন করে পুলিশ নিয়োগ দিলে অনেক যুবকের কর্মসংস্থান হতো। আমি সরকারকে বলব, আপনারা এক সপ্তাহের মধ্যে ৫০ হাজার পুলিশ নিয়োগ দিন।’

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের ১০ মাস পরে হওয়ার কথা ছিল না উল্লেখ করে ইনকিলাব মঞ্চের এই নেতা বলেন, ‘এটা তো তাদের দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই করার কথা ছিল।’

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা মনে কইরেন না আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় আমরা আমাদের অন্যান্য দাবি ভুলে যাব। আপনাদের অতি দ্রুত গণহত্যার বিচার শুরু করতে হবে। শুধু জুলাই গণহত্যা নয়, একই সঙ্গে পিলখানা ও শাপলা গণহত্যার বিচার শুরু করতে হবে।’

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ব্যাপারে শরিফ ওসমান হাদী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একটা ধারা ছিল, এই ট্রাইব্যুনাল যেকোনো দলেরও বিচার করতে পারবে। কিন্তু গতকাল বলা হলো এটা আগে আইনে ছিল না, আইন সংশোধন করে নতুন করে তা যুক্ত করা হলো। কিন্তু এটা তো পূর্বের আইনে ছিল। তাহলে আমাদের প্রশ্ন হলো কোন উপদেষ্টা এই আইন বাদ দিয়েছেন?’

চলতি বছরের জানুয়ারিতে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল গঠনের কথা বলেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কিন্তু এই মে মাসে যখন জনতা আন্দোলনে নামল, তখন আপনারা বলছেন, এই মে মাসেই দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল করবেন। তাহলে এত দিন সেটা করেন নাই কেন?’

শরিফ ওসমান হাদী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘এই প্রজ্ঞাপনে (লীগ নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন) জাতীয় পার্টির নাম নাই কেন? তারা কি দুধে ধোয়া? তারা কি বিনা ভোটে এমপি হন নাই? আওয়ামী লীগের শরিক ১৪–দলীয় জোটের নাম নাই কেন?’