মার্কিন ভিসা নীতি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে কাঁপন তৈরি করেছে: মান্না

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বক্তব্য রাখছেন। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান। জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা, ৯ জুন
ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে কাঁপন তৈরি করেছে।

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপন উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আওয়ামী লীগ এখন বিএনপির সঙ্গে বসতে চায়। পথ খুঁজতে চায়। আওয়ামী লীগ আগেভাগে বোঝাতে চায়, তারা বিএনপির সঙ্গে বসে সবকিছুর নিষ্পত্তি করতে চায়। কিন্তু এই কথা বলে পালানোর জায়গা পাবে? এ কারণে সরকারের বাকি মন্ত্রীরা বলছেন, ‘না, তোমাদের (বিএনপি) সাথে বসব না।’

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, ‘আর আমরা বলছি, তোমাদের (আওয়ামী লীগ) সাথে বসার প্রশ্ন আসে না। কারণ, আমরা চাই তোমরা যাও।’

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপনের অনুষ্ঠান। জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা, ৯ জুন
ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

দেশ এখন বদলাচ্ছে মন্তব্য করে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, পুলিশ এখন বিরোধী দলের সমাবেশ রক্ষা করছে। তা না হলে তারা আমেরিকা যেতে পারবে না।

অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেন, পুলিশ, প্রশাসন, সাংবাদিকদের কোনো দল নেই। কিন্তু সব জায়গায় দলবাজি হয়ে গেছে। কেউ অন্যায় করলে সবার রুখে দাঁড়াতে হবে।

আবদুস সালাম আরও বলেন, আমেরিকা-ইউরোপসহ সারা বিশ্ব থেকে দেশকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলছে এই সরকার, যা মহাবিপৎসংকেত। তাদের (বর্তমান সরকার) ক্ষমতা থেকে নামাতে হবে। আর ক্ষমতায় কে যাবে, তা জনগণের ওপর ছেড়ে দিতে হবে।

অনুষ্ঠানে দৈনিক নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন বলেন, ‘আমরা যেন মানুষের কথা বলতে পারি, এ জন্য সাংবাদিকদের একত্রিত হতে হবে। বারবার ঐক্য ভেঙে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। সাংবাদিকদের ঐক্য ভাঙতে পারলে ক্ষমতাসীনদের তাতে সত্য লুকানো সহজ হয়।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন নিউ নেশনের সাবেক সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাবেক সভাপতি ইলিয়াস হোসেন প্রমুখ। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএফইউজের মহাসচিব নুরুল আমিন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিএফইউজের সভাপতি এম আবদুল্লাহ। অনুষ্ঠানে কবি কামাল ফরিদ কবিতা আবৃত্তি করেন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হওয়া নির্যাতন নিয়ে একটি তথ্যচিত্র দেখানো হয়।

আলোচনা অনুষ্ঠানের পর সুবর্ণজয়ন্তী স্মরণিকা উন্মোচন, স্মারক প্রদান, ফল উৎসব, আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও শোভাযাত্রার মাধ্যমে প্রথম পর্বের আয়োজন শেষ হয়।

দ্বিতীয় পর্বে সাহসী সম্পাদক ও নির্যাতিত সাংবাদিকদের সম্মাননা প্রদান করে বিএফইউজে। এই পর্বে বক্তব্য দেন সাবেক বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক তাজমেরী এস ইসলাম, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমাদ আব্দুল কাদের ও ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান প্রমুখ। এম আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে দ্বিতীয় পর্বের আয়োজনের সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক ও গীতিকার আমিরুল মোমেনিন।

সুবর্ণজয়ন্তীর এই আয়োজনে সাংবাদিক নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রেসক্লাবের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি হাসান হাফিজ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান, বিএফইউজের সহসভাপতি মোদাব্বের হোসেন, ওবায়দুর রহমান, রাশিদুল ইসলাম প্রমুখ। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী এই আয়োজনের সমাপ্তি ঘটে।