৩০২ ধারা সংযোজন না করে অভিযোগপত্র দেওয়ায় ওসি ও তদন্ত কর্মকর্তাকে আদালতে তলব

আদালত
প্রতীকী ছবি

জখমে মৃত্যুর পর দণ্ডবিধির ৩০২ (নরহত্যা) ধারা যুক্ত না করে শুধু মারধরের ধারায় অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার অভিযোগে নাটোরের সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও তদন্ত কর্মকর্তাকে সশরীর আদালতে হাজির হয়ে লিখিত কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সিংড়া আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সাঈদ এ নির্দেশ দিয়েছেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ১১ আগস্ট সিংড়ার নিলুফা ইয়াসমিন বাদী হয়ে তাঁর স্বামী আবদুল খালেককে মারধরে হত্যার ঘটনায় আদালতে মামলা করেন। তবে এর আগে ২১ মে নিলুফা ইয়াসমিনের ছেলে রিপন আলী সিংড়া থানায় অভিযোগ জমা দিলেও সিংড়া থানার ওসি অভিযোগটি মামলা হিসেবে নেননি। পরে ৮ জুন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবদুল খালেক মারা গেলে ওসি তড়িঘড়ি করে শুধু সাধারণ জখমের অভিযোগে মামলা রেকর্ড করেন। ময়নাতদন্ত ছাড়াই নিহত ব্যক্তির দাফন সম্পন্ন হলেও ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম কোনো পদক্ষেপ নেননি। বরং তড়িঘড়ি করে সাধারণ জখম ও হত্যাচেষ্টার ধারা দিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। বাদী পরে বিষয়টি সিংড়া আমলি আদালতের নজরে নিয়ে আসেন এবং ৩০২ ধারা সংযোজন করে নতুন করে মামলা চালু করার জন্য দরখাস্ত করেন।

শুনানি শেষে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সাঈদ কেন বিলম্বে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে, তার কারণ ব্যাখ্যা করার জন্য সিংড়ার ওসি নূর এ আলম সিদ্দিকীকে এবং জখমে মৃত্যু হওয়া সত্ত্বেও কেন ৩০২ ধারা সংযোজন না করে দায়সারা তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে, তার কারণ ব্যাখ্যা করতে তদন্ত কর্মকর্তাকে ৭ সেপ্টেম্বর সশরীর আদালতে হাজির হয়ে লিখিত কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে পিবিআই নাটোরের পুলিশ সুপারকে ঘটনাটি হত্যা মামলা হিসেবে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী সাইদুর রহমান বলেন, পুলিশ জখমে মৃত্যুর বিষয়টি জানার পরও ৩০২ ধারা সংযোজন না করে ন্যায়বিচার থেকে বাদীকে বঞ্চিত করেছেন।
তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী আলী আজগর বলেন, ঘটনাটি উভয় পক্ষ আপস-মীমাংসা করে নিয়েছিল। আবদুল খালেক প্রথমে সিংড়া হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার পর আবার অসুস্থ হন। পরে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। ওই মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে রাজশাহীর রাজপাড়া থানার তত্ত্বাবধানে নিহত ব্যক্তির ময়নাতদন্ত হয়েছে। সেখানে জখমজনিত কারণে মৃত্যুর প্রমাণ মেলেনি। তাই তদন্ত কর্মকর্তা সাধারণ জখমের ধারায় অভিযোগপত্র দিয়েছেন।

সিংড়া থানার ওসি নূর এ আলম সিদ্দিকী বলেন, আদালত থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত তিনি কোনো কাগজপত্র পাননি। আদালতের নির্দেশনা না পড়ে এ ব্যাপারে কিছু বলা যাবে না। মামলা তদন্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামও এ বিষয়ে একই কথা বলেন।