১৬ বছর আগে টাকা পরিশোধ করেও প্লট পাননি তাঁরা
প্রায় ১৬ বছর আগে টাকা পরিশোধ করেও এখনো প্লট পাননি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের লেক সিটি আবাসন প্রকল্পের গ্রাহকেরা। প্লট বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তাঁরা।
আজ রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্লটবঞ্চিত চট্টগ্রাম লেক সিটি হাউজিং সোসাইটির আহ্বায়ক সৈয়দ মুহাম্মদ আবুল হাশেম। উপস্থিত ছিলেন মো. সালাহ উদ্দিন, আবদুল হক, নুরুল আলম প্রমুখ।
নগরের বিশ্ব কলোনি এলাকায় এই আবাসন প্রকল্প করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। এই প্রকল্পে ৫৪৮ জনকে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্লট পেয়েছেন ৪৫০ জন। বাকি ৯৮ জন প্লট পাননি। দীর্ঘদিন ধরে প্লট না পাওয়ায় তাঁরা সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২০০৬ সালে সিটি করপোরেশনের লেক সিটি আবাসন প্রকল্পে প্লট কিনতে টাকা পরিশোধ করেছিলেন। ওই সময় আবেদন জমা পড়েছিল ৫৪৮টি। প্রথমে সবাইকে তিন কাঠা জমি দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২০০৯ সালে সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী জায়গার অপ্রতুলতার কারণে তিন কাঠার পরিবর্তে আড়াই কাঠা জমি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। প্লট পাওয়ার জন্য প্রথম দফায় ১৭ লাখ টাকা ও দ্বিতীয় দফায় আরও ৫ লাখ টাকা পরিশোধ করেন তাঁরা।
সংবাদ সম্মেলনে গ্রাহকেরা বলেন, কেউ গ্রামের বাড়ির সম্পত্তি বিক্রি, পেনশনের টাকা, প্রবাসে উপার্জিত অর্থ আবার কেউ স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে টাকা জমা দিয়েছিলেন। অল্প সময়ের মধ্যে প্লট বুঝিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও অনিয়মের কারণে প্লট পাননি তাঁরা।
দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছরে সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে কয়েক দফা পরিবর্তন এলেও ভাগ্য বদলায়নি গ্রাহকদের। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এখন পর্যন্ত মাত্র ৪৫০ জনকে প্লট বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি ৯৮ জনের প্লটের কোনো সুরাহা হয়নি। তাই প্লট পাওয়া নিয়ে তাঁদের মধ্যে অনিশ্চয়তা আছে। প্লটের আশায় অপেক্ষা করতে করতে অনেক সদস্য মারাও গেছেন।
দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্লট বুঝিয়ে দিতে সিটি করপোরেশনের মেয়রসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়ে পাঁচ দফা দাবি উপস্থাপন করেন গ্রাহকেরা।
দাবিগুলো হচ্ছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সব সদস্যকে প্লট বরাদ্দ দেওয়া, একই স্থানে প্লটমালিকদের মালিকানা দলিল হস্তান্তর করা, লেক সিটি আবাসন প্রকল্পের বিপরীতে জমা দেওয়া সব অর্থের সঠিক ব্যয়ের হিসাব দেওয়া, তৎকালীন মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সময় প্রস্তাবিত পরিকল্পনা ও নকশা অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়ন করা এবং সমস্যা সমাধানে বর্তমান মেয়রকে উদ্যোগ নেওয়া।