পুলিশ–গণমাধ্যমকর্মী–জনসাধারণের ওপর আক্রমণ মানবাধিকারের লঙ্ঘন: জাতীয় মানবাধিকার কমিশন

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন

রাজধানীতে গতকাল ২৮ অক্টোবর প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। আজ রোববার দেওয়া এক বিবৃতিতে এই উদ্বেগের কথা জানায় কমিশন। বিবৃতিতে বলা হয়, দেশজুড়ে ব্যাপক সংঘাতে নির্বিচার পুলিশ, গণমাধ্যমকর্মী ও জনসাধারণকে আক্রমণের ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।  

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘একটি গণতান্ত্রিক দেশে রাজনৈতিক দলগুলো সভা–সমাবেশ করবে, একে অপরকে বিভিন্ন ইস্যুতে গঠনমূলক সমালোচনা করবে, এটাই প্রত্যাশিত। তবে সভা-সমাবেশের নামে জনগণের জানমালের ওপর আক্রমণ, অগ্নিসংযোগ ও সংঘর্ষের ঘটনা চরম নিন্দনীয়, যার নিন্দা ও সমালোচনা প্রকাশের কোনো ভাষা নেই।

মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ফকিরাপুলে বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে দুবৃত্তরা একজন পুলিশ সদস্যকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে, যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এ ছাড়া গতকাল এবং আজ বিভিন্ন গণপরিবহন, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় হতাহতের সংবাদ, জনসাধারণকে নির্বিচার আক্রমণ, পুলিশ ও গণমাধ্যমকর্মীদের বেধড়ক পেটানোর বিবিধ তথ্য কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এ অবস্থায় জনমনে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। সৃষ্ট সহিংস রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সুস্থ রাজনৈতিক চর্চার বদলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে।

কমিশন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করে অবিলম্বে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার আহ্বান জানান মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, জনসাধারণের অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও সহিংসতামুক্ত চলাফেরার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, সে প্রচেষ্টা চালাতে হবে।’

কামাল উদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে রাজনৈতিক সম্প্রীতি ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার সম্পর্ক তৈরি গুরুত্বপূর্ণ। কোনো প্রকার নৈরাজ্য সৃষ্টি হলে সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী হন জনগণ। সব রাজনৈতিক দলকে জনমুখী, সহনশীল এবং সংঘাতমুক্ত রাজনৈতিক চর্চা করতে হবে।’