করোনায় ২১৫ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ১০ হাজারের বেশি

দেশজুড়ে করোনার টিকার জন্য আগ্রহ বেড়েছে মানুষের
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

দেশে করোনা সংক্রমণে গত ২৪ ঘণ্টায় (বুধবার সকাল ৮টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) আরও ২১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ১০ হাজার ১২৬ জন।

আজ বৃহস্পতিবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেশে করোনা সংক্রমণের সবশেষ পরিস্থিতি জানানো হয়। করোনায় মৃত্যু ও রোগী শনাক্ত আগের দিনের তুলনায় কমেছে। আগের দিন ২৩৭ জনের মৃত্যু এবং ১০ হাজার ৪২০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৪৫ হাজার ৭৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ২২ দশমিক ৪৬ শতাংশ। আগের দিন পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ছিল ২৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সব মিলিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ৯৬ হাজার ৮৬৮। মোট মৃত্যু হয়েছে ২৩ হাজার ৬১৩ জনের। আর করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১২ লাখ ৬২ হাজার ৬৫ জন। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১৩ হাজার ৯৯০ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে। এরপর চট্টগ্রাম বিভাগে মারা গেছেন ৫৪ জন, খুলনা বিভাগে ২৮ ও সিলেট বিভাগে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকিরা অন্যান্য বিভাগের।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণ দেখা দেয়। কয়েক মাসের মধ্যে এই ভাইরাস বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ।

এরপর বিভিন্ন সময়ে সংক্রমণ কমবেশি হলেও দুই মাসের বেশি সময় ধরে দেশে করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক অবস্থায় পৌঁছেছে। করোনার ডেলটা ধরনের দাপটে দৈনিক সংক্রমণ ও মৃত্যু কয়েক গুণ বেড়েছে। গত জুলাই মাসে দেশে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৬ হাজার ১৮২ জনের। প্রায় দেড় বছর ধরে চলা এই মহামারিতে এর আগে কোনো মাসে এত মৃত্যু দেখেনি বাংলাদেশ। এর আগে বেশি মৃত্যু হয়েছিল গত এপ্রিলে ২ হাজার ৪০৪ জনের।

সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে গত মাসের মাঝামাঝিতে ঈদুল আজহা ঘিরে আট দিন ছাড়া পুরো সময় কঠোর বিধিনিষেধ পালন করা হয়। সেই বিধিনিষেধ গতকালই শেষ হয়েছে। আজ সব অফিস–আদালত, ব্যাংক, রেস্তোরাঁ, দোকানপাট ও গণপরিবহনসহ প্রায় সব কিছু খুলে দেওয়া হয়েছে। মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে এতদিন বাস–ট্রেন–লঞ্চে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে যাত্রী পরিবহন করতে দেওয়া হয়েছিল। তবে এবার আর সেই বিধিনিষেধ আর নেই।

বর্তমানে সারা বিশ্বেই করোনার ডেলটা ধরনের দাপট চলছে। এরইমধ্যে বিশ্বের অন্তত ১৪২টি দেশ ও অঞ্চলে করোনার অতিসংক্রামক এই ধরন ছড়িয়েছে। এর ফলে বিশ্বজুড়েই করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়েছে।

বুধবার দেওয়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বের যেসব দেশে এক দিনে সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছে সেই তালিকায় বাংলাদেশে অবস্থান ১১তম । সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ইন্দোনেশিয়ায় ১ হাজার ৫৭৯ জনের। তারপরে মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে ৯১৩ জনের। তৃতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে রাশিয়ায় ৭৯৯ জনের।

এ সময় সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ১ লাখ ৬৬ হাজার ৫২১ জন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রোগী শনাক্ত হয়েছে ইরানে ৩৯ হাজার ১৩৯ জন। রোগী শনাক্তের তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারত, ৩৮ হাজার ৩৫৩ জন।

এখন পর্যন্ত বিশ্বে মোট করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ২০ কোটি ৩৯ লাখ ৪৪ হাজার ১৪৪ জন। আর মৃত্যু হয়েছে ৪৩ লাখ ১২ হাজার ৯০২ জনের। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত ও মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। এরপরে বেশি মৃত্যু হয়েছে ব্রাজিল ও ভারতে।