বিনা মূল্যে মাস্কসহ ৫ দফা সুপারিশ পরামর্শক কমিটির

ফাইল ছবি

দেশে করোনার সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। গতকাল বুধবার শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সাড়ে নয় হাজারে পৌঁছেছে। এ সময় করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ২৫ ছাড়িয়ে গেছে। এক দিনের ব্যবধানে নতুন রোগী বেড়েছে ১ হাজার ৯৩ জন। এ অবস্থায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিনা মূল্যে মাস্ক বিতরণসহ পাঁচ দফা সুপারিশ করেছে কোভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।
গতকাল রাতে কোভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি মো. সহিদুল্লা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির ৫৩তম সভা জুম প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোভিড-১৯ রোগের সাম্প্রতিক ক্রমবর্ধমান সংক্রমণ বিষয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ ও আলোচনা হয়। কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে বিস্তারিত আলোচনা শেষে সভায় পাঁচটি সুপারিশ করা হয়।

করোনা নিয়ন্ত্রণে জনসমাগমস্থলে বাধ্যতামূলকভাবে সবাইকে মাস্ক পরিধান করতে বলা হলেও অনেকের মধ্যেই তা মানতে অনীহা দেখা যায়। নিউমার্কেট, ঢাকা, ১৭ জানুয়ারি
ছবি: খালেদ সরকার

প্রথম সুপারিশে বলা হয়, কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগীরা লক্ষণ প্রকাশের ১০ দিন পর্যন্ত আইসোলেশনে থাকবেন। এ ছাড়া কোভিড-১৯ নিশ্চিত রোগীর সংস্পর্শে এসেছেন—এমন ব্যক্তি, যাঁদের কোনো উপসর্গ নেই, তাঁদের কোয়ারেন্টিনের প্রয়োজন নেই। তবে তাঁদের টাইট মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে হবে।

কমিটি বিমানবন্দরসহ সব প্রবেশস্থলে সরকারি স্বাস্থ্য নির্দেশনা যথাযথভাবে পালনের লক্ষ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে নজরদারি বাড়ানোর সুপারিশ করে।

সব সরকারি হাসপাতালে সার্বক্ষণিক কোভিড-১৯ ও নন-কোভিড, সব রোগীর জরুরি চিকিৎসা নিশ্চিত করার সুপারিশ করে কমিটি।

দেশে প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা রোগী। রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতাল কেন্দ্রে করোনা পরীক্ষা করতে অনেকেই এসেছেন নানা উপসর্গ নিয়ে। ঢাকা, ১৮ জানুয়ারি
ছবি: দীপু মালাকার

মন্ত্রিপরিষদ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনের বাস্তবায়নে অংশীদের, যেমন পরিবহন মালিক সমিতি, দোকান মালিক সমিতি, রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির নেতাসহ, সবাইকে সম্পৃক্ত করে পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশও আসে।

জাতীয় পরামর্শক কমিটি জনগণকে মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে সাধারণ জনগণকে বিনা মূল্যে মাস্ক বিতরণের প্রস্তাব করেছে। এ কাজে জনপ্রতিনিধি ও ধর্মীয় প্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করার প্রস্তাব করা হয়। তাঁদের মাধ্যমে জনগণকে সঠিকভাবে মাস্ক পরা এবং অন্য স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করার সুপারিশ করা হয়।

গতকাল বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মারা যাওয়া ১২ জনের মধ্যে ১০ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। তাঁদের মধ্যে আটজনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে। চট্টগ্রামে দুজন এবং রাজশাহী ও সিলেট বিভাগে একজন করে মারা গেছেন। আটজনের মৃত্যু হয়েছে সরকারি হাসপাতালে, তিনজনের বেসরকারি হাসপাতালে এবং একজনের বাসায়।

ছবি : রয়টার্স

২০২০ সালের মার্চে বাংলাদেশে প্রথম করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। ৮ মার্চ প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। ওই বছরের ১৮ মার্চ প্রথম করোনায় মৃত্যু হয়। এখন পর্যন্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৬ লাখ ৪২ হাজার ২৯৪ জন। সংক্রমিত ব্যক্তিদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৮ হাজার ১৭৬ জনের। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৫ লাখ ৫৪ হাজার ২৬৮ জন। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৪৭৩ জন সুস্থ হয়েছেন।