ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সন্দেহে ঢাকায় একজনের মৃত্যু

ভারতের আহমেদাবাদে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে শনাক্ত রোগীর পরীক্ষা চলছে।
এএফপি ফাইল ছবি।

তিন দিন আগে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে একজন রোগীর মৃত্যু হয়। আজ মঙ্গলবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরীক্ষা–নিরীক্ষায় দেখা গেছে, ওই রোগী অন্যান্য রোগের পাশাপাশি মিউকোরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত ছিলেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমিত একজন রোগী এখনো বারডেম হাসপাতালে ভর্তি আছেন। শনাক্ত হওয়া আরেকজন রোগী অন্য হাসপাতালে চলে গেছেন।

আজ সকালে বারডেম হাসপাতালের রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক এম দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ভর্তি থাকা রোগীর পরিস্থিতি উদ্বেগজনক নয়। তাঁকে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। ওষুধের দাম অনেক বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার কর্মকর্তাদের সঙ্গে ওষুধের ব্যাপারে যোগাযোগ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

অধ্যাপক এম দেলোয়ার হোসেনের তত্ত্বাবধানে বারডেম হাসপাতালের একটি কেবিনে ৫৫ বছর বয়সী এই রোগীর চিকিৎসা চলছে। রোগীর বাড়ি সাতক্ষীরা জেলায়। প্রায় এক মাস আগে তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন। সুস্থ হয়ে তিনি বাড়ি যান। কিন্তু আবার জ্বর দেখা দিলে তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন এবং সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শে তাঁকে বারডেমে নেওয়া হয়।

অধ্যাপক এম দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, রোগী চার থেকে পাঁচ বছর ধরে ডায়বেটিসে ভুগছেন। এরপর তিনি কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। জ্বর ও কাশি না কমায় চিকিৎসকেরা তাঁকে যক্ষ্মার ওষুধও দিয়েছেন। এখন দেখা যাচ্ছে তিনি মিউকোরমাইকোসিসে আক্রান্ত।

এম দেলোয়ার হোসেন বলেন, তিন দিন আগে ৬৫ বছর বয়সী একজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এই রোগীর অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিস ছিল। তাঁর কিডনির সমস্যা ছিল। তিনি কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়েছিলেন। চিকিৎসার সময় বোঝা যায়নি যে তিনি মিউকোরমাইকোসিসে আক্রান্ত ছিলেন। মৃত্যুর পর এটা সন্দেহ করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন

অণুজীববিজ্ঞানী, জনস্বাস্থ্যবিদ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক অধ্যাপক বে-নজির আহমেদ বলছেন, মিউকোরমাইকোসিস নতুন কোনো ছত্রাক নয়। এই ছত্রাক পরিবেশেই আছে। রো গপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম—এমন ব্যক্তিদের এই ছত্রাকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। অধ্যাপক এম দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘যাদের অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিস থাকে, তাদের ঝুঁকি বেশি। আবার স্টেরয়েড গ্রহণ করা কোনো কোনো ব্যক্তিও এতে আক্রান্ত হতে পারেন।’

মিউকোরমাইকোসিস ছোঁয়াচে নয়। শরীরের যেকোনো স্থানে এর সংক্রমণ হতে পারে। নাকের আশপাশে ও চোখে সংক্রমণ বেশি হয়। চোখে সংক্রমণ হলে তা দ্রুত মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আক্রান্ত এলাকায় রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, ওই এলাকা কালো হয়ে যায়। তাই একে ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ বলা হয়।

ভারতে মিউকোরমাইকোসিস বা ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। দেশটিতে এ পর্যন্ত ৮ হাজার ৮০০ জন এই ফাঙ্গাসে সংক্রমিত হয়েছে।

আরও পড়ুন