শয্যা বাড়িয়েও রোগী সামলানো যাচ্ছে না

রাজশাহী, খুলনা ও যশোরে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোয় শয্যা বাড়ানোর পরও প্রায় প্রতিদিনই শয্যার চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি থাকছেন।

করোনা সন্দেহে তাপমাত্রা পরীক্ষার প্রতীকী ছবি।

শয্যা বাড়িয়েও করোনা রোগীদের চাপ সামলানো যাচ্ছে না। রাজশাহী, খুলনা ও যশোরে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোয় দফায় দফায় শয্যা বাড়িয়েও রোগীদের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। প্রায় প্রতিদিনই নির্দিষ্ট শয্যার চেয়ে বেশি করোনা রোগী ভর্তি থাকছেন এসব হাসপাতালে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে খুলনায় আগামী মঙ্গলবার থেকে সাত দিনের লকডাউনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। লকডাউন শুরু হয়েছে বগুড়া ও চুয়াডাঙ্গায়।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুই দফা শয্যাসংখ্যা বাড়ানো হলেও জুন থেকে এখানে শয্যার চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি থাকছেন। ৩ জুন শয্যার চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হন এ হাসপাতালে। পরে ৭ জুন হাসপাতালটিতে শয্যা বাড়িয়ে ২৭১ করা হয়। তাতেও রোগী সামাল দেওয়া যাচ্ছিল না। কয়েক দিন আগে আবারও শয্যা বাড়িয়ে ৩০৯-এ উন্নীত করা হয়। তারপরও গতকাল পর্যন্ত এ হাসপাতালে ৩৬৫ করোনা রোগী ভর্তি ছিলেন।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী প্রথম আলোকে বলেন, গত ঈদের পর থেকেই এখানে রোগীর চাপ রয়েছে। জুন মাসে এটা শয্যার চেয়ে বেশি হয়ে যায়। এখানে আরও চিকিৎসক প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

খুলনার ১৩০ শয্যাবিশিষ্ট করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালেও চাপ বেড়েছে। দুই সপ্তাহ ধরে প্রতিদিনই হাসপাতালে শয্যাসংখ্যার চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি থাকছেন। এ রকম পরিস্থিতিতে খুলনা জেনারেল (সদর) হাসপাতালকে ৭০ শয্যার করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে রূপান্তর করা হয়েছে। আজ রোববার থেকে এটি চালু হচ্ছে।

খুলনা ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালে গতকাল সকাল আটটা পর্যন্ত রোগী ভর্তি ছিলেন ১৫৫ জন। এর মধ্যে ১৩৪ জন করোনা নিয়ে, বাকি ২১ জন উপসর্গ নিয়ে ভর্তি ছিলেন।

এ হাসপাতালের মুখপাত্র চিকিৎসক সুহাস রঞ্জন হালদার প্রথম আলোকে বলেন, করোনায় আক্রান্ত রোগীর চাপ সামলাতে এখানে ১৬ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে ৩০টি শয্যা বাড়ানো হয়েছে। তারপরও রোগীর চাপ সামলাতে চিকিৎসক ও নার্সদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। শয্যা বাড়ানো হলেও এখনো জনবল পাওয়া যায়নি। এ জন্য স্থানীয়ভাবে ব্যবস্থা করে কাজ চালিয়ে নিতে হচ্ছে।

এদিকে খুলনা জেলা ও মহানগরে সাত দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। ২২ জুন থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত লকডাউন কার্যকর থাকবে। গতকাল দুপুরে জেলা করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটির এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

যশোর জেনারেল হাসপাতালে শয্যা পাচ্ছেন না করোনা উপসর্গের অনেক রোগী। এ হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে নারী ও পুরুষের জন্য ১৯টি শয্যা রয়েছে। সেখানে ভর্তি আছেন ৩৪ জন।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. আখতারুজামান বলেন, করোনা রেড ও ইয়েলো জোনে ৯৯ শয্যার বিপরীতে ১২০ রোগী ভর্তি আছেন। তিন শয্যার আইসিইউতে কোনো শয্যা খালি নেই। করোনা ইউনিট ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে গুরুতর রোগীদের জন্য ২৫টি শয্যা আলাদা করে একটি ওয়ার্ড খোলা হচ্ছে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গতকাল শনিবার মধ্যরাত থেকে বগুড়া শহরে সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হয়েছে। গতকাল জেলা প্রশাসক মো. জিয়াউল হক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই ঘোষণা দিয়েছেন। রাত ১২টা থেকে বগুড়া শহর এলাকায় আগামী সাত দিন এই লকডাউন কার্যকর থাকবে। এর আগে গত বছরের ২১ এপ্রিল প্রথম দফায় জেলাজুড়ে লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছিল জেলা প্রশাসন।

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার পর এবার চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকা ও সদর উপজেলার আলোকদিয়া ইউনিয়নে সাত দিনের জন্য লকডাউন দেওয়া হয়েছে।