সিনোফার্মের টিকা দেওয়া শুরু, হিসাবে গরমিল

টিকা
ফাইল ছবি: রয়টার্স

দেশব্যাপী চীনের সিনোফার্মের করোনা টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া শুরু হয়েছে। পাশাপাশি কয়েকটি জায়গায় অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার দ্বিতীয় ডোজও দেওয়া চলছে। তবে প্রথম দিন দেওয়া সিনোফার্মের টিকার যে হিসাব স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দিয়েছে, তাতে গরমিল দেখা গেছে।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো টিকাবিষয়ক বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যায়, গোপালগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও শরীয়তপুর জেলায় সিনোফার্মের কোনো টিকা কাউকে দেওয়া হয়নি। গোপালগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার সাকিবুর রহমান প্রথম আলোর প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের ২৫ জন শিক্ষার্থী ও দুজন স্বাস্থ্যকর্মীকে চীনের সিনোফার্মের টিকা দেওয়া হয়েছে।

শরীয়তপুর জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় জানিয়েছে, জেলায় নয়জনকে চীনের টিকা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে কিশোরগঞ্জের ডেপুটি সিভিল সার্জন মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের ৮৩ জন শিক্ষার্থীকে সিনোফার্মের টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে।

টিকার তথ্য গণমাধ্যমে পাঠায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস)। হিসাবের গরমিল বিষয়ে বক্তব্যের জন্য মুঠোফোনে চেষ্টা করে এমআইএসের পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

সিনোফার্মের টিকা প্রতি জেলায় একটি কেন্দ্রে দেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্র হিসেবে সরকারি মেডিকেল কলেজকে বেছে নেওয়া হয়েছে। যেসব জেলায় মেডিকেল কলেজ নেই, সেসব জেলায় সদর হাসপাতাল বা ২৫০ শয্যার হাসপাতালকে টিকাকেন্দ্র করা হয়েছে। ঢাকা জেলায় টিকা দেওয়া হচ্ছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এসব কেন্দ্রে গতকাল মোট ৪ হাজার ৩২০ জনকে সিনোফার্মের টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে।

চীনের টিকা পাওয়ার অগ্রাধিকারের তালিকায় আছেন ইতিমধ্যে নিবন্ধন করা ব্যক্তি, যাঁরা এখনো কোনো টিকা পাননি তাঁরা, বাংলাদেশে বসবাসরত সব চীনা নাগরিক, সরকারি স্বাস্থ্যকর্মী ও পুলিশ, বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মী, সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের শিক্ষার্থী, সরকারি নার্সিং ও মেডিকেল কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের শিক্ষার্থী, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারী, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং কোভিড-১৯ মৃতদেহ সৎকারে জড়িত ব্যক্তি।

মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের টিকা নেওয়ার সুবিধার জন্য সীমিত আকারে হোস্টেল খোলার কথা বলেছে কর্তৃপক্ষ। ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মো. টিটো মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, একসঙ্গে সব শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়া হবে না। টিকা দেওয়ার দিন অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের হোস্টেলে আসতে বলা হচ্ছে। টিকা দেওয়ার পরদিনই তাদের হোস্টেল ছেড়ে যেতে হবে। তারপর আবার একদল শিক্ষার্থী আসবে।

তবে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হল খোলার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, অধিদপ্তর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে।

চলছে দ্বিতীয় ডোজ

গতকাল ২ হাজার ৫৮৯ জনকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে। রাজধানীর ৪৭টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৫টিতে এবং ১৪টি জেলায় এই টিকা দেওয়া হয়েছে।

এ পর্যন্ত ৪২ লাখ ৬৬ হাজার ৯৫১ জন অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন।