করোনায় আবার মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ৭৩ জন

করোনাভাইরাসফাইল ছবি রয়টার্স

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে আরও এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি মাসে করোনায় পাঁচজনের মৃত্যু হলো। আর চলতি বছর মৃত্যু হলো মোট ১০ জনের।

আজ বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, দেশে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল বুধবার সকাল আটটা থেকে আজ সকাল আটটা পর্যন্ত) করোনাভাইরাস সংক্রমণে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তিনি ঢাকার বাসিন্দা। এই ২৪ ঘণ্টায় ৭৩ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৬৬ জনই ঢাকার।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সন্দেহে ৭১৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ১০ দশমিক  ১৮।

দেশে এখন পর্যন্ত ২০ লাখ ৪৮ হাজার ১১৬ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ২০ লাখ ১৫ হাজার ১৮০ জন। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ২৯ হাজার ৪৮৭ জন মারা গেছেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ইমেরিটাস অধ্যাপক এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, যেসব ব্যক্তি এখন মারা যাচ্ছেন, তাঁদের বেশির ভাগেরই ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যা বা ক্যানসারসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত। এসব রোগ যাঁদের আছে, তাঁদের বাড়তি সাবধানতা দরকার। কিন্তু দেখা যাচ্ছে রোগ নির্ণয় হচ্ছে অনেক দেরিতে। আর তাতে জটিলতা বাড়ছে।

বাংলাদেশে করোনার অমিক্রন ধরনের একটি উপধরন জেএন.১-তে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। দ্রুত ছড়ানোর কারণে জেএন.১-কে ‘ভেরিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট’ হিসেবে অভিহিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কিছু সতর্কতা মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে। অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্বের বেশ কিছু দেশে কোভিড-১৯–এর নতুন ভেরিয়েন্ট জেএন.১–এর সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থায় উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে যেমন হাসপাতাল বা চিকিৎসাকেন্দ্র এবং উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি যাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম, তাদেরকে সতর্ক হিসেবে মাস্ক পরতে হবে। উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের চতুর্থ ডোজ টিকা নেওয়ারও পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. মুশতাক হোসেন আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘করোনাকালে আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অভ্যাস হয়েছিল। এর ফলে ইনফ্লুয়েঞ্জা, শ্বাসকষ্টের সমস্যাসহ নানা সমস্যাও কমে গিয়েছিল। কিন্তু করোনার প্রকোপ কমে যাওয়ার ফলে সেসব অভ্যাস আর নেই। কিন্তু করোনার নতুন ধরন আসার ফলে এখন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব না হলেও মাস্ক পরার অভ্যাসটা ফিরিয়ে আনতে হবে।’

করোনার পাশাপাশি এখনো প্রতিদিন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন কেউ কেউ। ডেঙ্গুতে হাসপাতালে ভর্তি আগের চেয়ে অনেক কমলেও তা একেবারে কমে যায়নি।

ডা. মুশতাক হোসেনের পরামর্শ, এখন জ্বর হলে ডেঙ্গু ও করোনা—দুই টেস্টই করতে হবে।

২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্তের ঘোষণা দেয় সরকার। করোনায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ওই বছরের ১৮ মার্চ। এর তিন বছর পর গত বছরের মে মাসে করোনার কারণে জারি করা বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।