আকাশপথে দেশে আসছে করোনা রোগী

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর
ফাইল ছবি

মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে করোনা ‘পজিটিভ’ কয়েকজন প্রবাসী দেশে ফিরেছেন। গত এক মাসে এ রকম সাতজন করোনা ‘পজিটিভ’ প্রবাসী ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শনাক্ত হন।

কোভিড-১৯ পজিটিভ সনদ থাকার পরও এসব যাত্রীকে ঢাকায় নিয়ে আসে একাধিক বিমান সংস্থা। সাত যাত্রীর মধ্যে চারজন সৌদি এয়ারলাইনসে, দুজন কাতার এয়ারওয়েজে ও একজন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে ঢাকায় আসেন।

করোনা ‘পজিটিভ’ সাত যাত্রীর সবাই প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিক। তাঁদের মধ্যে একজন নারী ও ছয়জন পুরুষ।

বিমানবন্দর–সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, করোনার কারণে গত মার্চ থেকে চীন ছাড়া বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে যাত্রীবাহী ফ্লাইট চলাচল বন্ধ করে দেয় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। তবে জুন থেকে সীমিত পরিসরে ফ্লাইট চলাচল শুরু হয়। বর্তমানে সৌদি আরবের সঙ্গে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ থাকলেও সেখান থেকে বাংলাদেশ বিমান ও সৌদি এয়ারলাইনসের বিশেষ ফ্লাইটে করে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে ফিরছেন। এ ছাড়া কাতার থেকেও বিশেষ ফ্লাইটে করে দেশে ফিরেছেন অনেকে।

বিমানবন্দর সূত্র জানায়, বাংলাদেশিদের দেশে ফেরার ক্ষেত্রে কোভিড সনদ বাধ্যতামূলক না থাকায় কেউ কেউ সুযোগ নিচ্ছেন। একই কারণে ফ্লাইটে ওঠার আগে বিমান সংস্থাগুলোও বাংলাদেশি যাত্রীদের কোভিড সনদ আছে কি না, তা যাচাই করছে না। আবার অনেক যাত্রীর করোনা ‘পজিটিভ’ সনদ থাকার পরও তাঁরা সেটি ঢাকায় বিমানবন্দরে এসে লুকিয়ে রাখছেন। তবে যাত্রীদের মধ্যে কেউ কেউ কোভিড সনদ বিমানবন্দরের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের কাছে দিয়েছেন। এভাবেই গত এক মাসে করোনা পজিটিভ সনদসহ সাতজন যাত্রী শনাক্ত হয়েছেন।

বিমানবন্দর সূত্র জানায়, সবশেষ ১৪ সেপ্টেম্বর বিমানবন্দরে সৌদি এয়ারলাইনসের এক যাত্রীকে করোনা পজিটিভ সনদসহ পাওয়া যায়। গত এক মাসে যে সাতজন যাত্রী শনাক্ত হন, তাঁদের কারও মধ্যে করোনার উপসর্গ ছিল না।

বিমানবন্দর–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ধারণা, এভাবে করোনাভাইরাসের আক্রান্ত আরও অনেক রোগী সহজেই বের হয়ে গেছেন।

১৪ সেপ্টেম্বর সবশেষ করোনা পজিটিভ সনদসহ যাত্রী শনাক্তের পর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করে বিমানবন্দর স্বাস্থ্যকেন্দ্র।

বিমানবন্দর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহারিয়ার সাজ্জাদ প্রথম আলোকে আজ বুধবার বলেন, বিষয়টি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর ওই দিন সংশ্লিষ্ট বিমান সংস্থাগুলোকে নিয়ে বৈঠক হয়। সাতজন কোভিড পজিটিভ রোগীকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। যে সাতজন কোভিড পজিটিভ রোগী পাওয়া গেছে, তাঁরা স্বাভাবিক যাত্রী হিসেবেই ঢাকায় আসেন।

এ ব্যাপারে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তৌহিদ-উল আহসান প্রথম আলোকে বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের ক্ষেত্রে দেশে ফেরার সময় যে কোভিড সনদ আনতে হবে, তেমন বাধ্যবাধকতা নেই। তাই অনেকে বিদেশ থেকে আসার সময় কোভিড পজিটিভ থাকার বিষয়টি লুকিয়ে রাখেন। বিমান সংস্থাগুলোও যাচাই করে না। তবে তাঁরা এ ব্যাপারে বিমান সংস্থাগুলোকে সতর্ক করে চিঠি পাঠিয়েছেন। তা ছাড়া সেসব যাত্রী কোভিড পজিটিভ সনদসহ শনাক্ত হয়েছেন, ফ্লাইটে তাঁদের আশপাশের যাত্রীদের সতর্ক করা হয়েছে।