করোনার উপসর্গে নারীর তুলনায় পুরুষের মৃত্যু চার গুণ: সিজিএস

করোনাভাইরাস
প্রতীকী ছবি

দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের দশম মাস চললেও বন্ধ হয়নি করোনার লক্ষণ বা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু। ২৯ নভেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে উপসর্গ নিয়ে দুজনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। করোনার উপসর্গ নিয়ে এ পর্যন্ত ২ হাজার ২০৫ জন মারা গেছেন। মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে নারীর তুলনায় পুরুষের সংখ্যা চার গুণ। সর্বোচ্চ ২৫২ জন মারা গেছেন কুমিল্লা জেলায়।

২৯ নভেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের করোনা পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে এমনটাই জানিয়েছে বাংলাদেশ পিস অবজারভেটরি (বিপিও)। এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের (সিজিএস) একটি প্রকল্প। জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনডিপির আর্থিক সহায়তায় কয়েকটি বিষয় নিয়ে নিয়মিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে বিপিও। করোনা পরিস্থিতি নিয়ে দেশের ২৫টি গণমাধ্যমের সংবাদ বিশ্লেষণ করে শনিবার নতুন প্রতিবেদন দিয়েছে বিপিও।

গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, কুমিল্লার পর চাঁদপুরে সর্বোচ্চ ১৫৭ জনের এমন মৃত্যু হয়েছে। খুলনায় ১১০ জন, সাতক্ষীরায় ১০৪ জন, চট্টগ্রামে ১০৩ জন, ঢাকায় ৯০ জন, বরিশালে ৮৯ জন, রাজশাহীতে ৬৩ জন, বগুড়ায় ৫৯ জন ও পটুয়াখালীতে ৫১ জন মারা গেছেন করোনার উপসর্গ নিয়ে। আগে প্রতি সপ্তাহে প্রতিবেদন দেওয়া হলেও এখন দুই সপ্তাহ পরপর দেওয়া হচ্ছে। এতে শেষ দুই সপ্তাহে মারা গেছেন দুজন। এর আগের দুই সপ্তাহে কেউ মারা যাননি।

বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৭৩৩ জন মারা গেছেন চট্টগ্রাম বিভাগে। ঢাকা বিভাগে ৩৯৪ জন, খুলনা বিভাগে ৩৫৩ জন, রাজশাহী বিভাগে ২২৩ জন, বরিশালে ২৪৪ জন, সিলেটে ১০২ জন, রংপুর ৯৫ জন ও ময়মনসিংহ বিভাগে ৬১ জন করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন।

এখন পর্যন্ত উপসর্গে মৃতের মধ্যে নারীর তুলনায় পুরুষের সংখ্যা চার গুণ। নারী মারা গেছেন ৪৩৬ জন। আর পুরুষ মারা গেছেন ১ হাজার ৭৬৯ জন।

বিপিও বলছে, ৮ মার্চ থেকে করোনার বিষয়ে গণমাধ্যমের প্রকাশিত তথ্য সংগ্রহ করে প্রতি সপ্তাহে একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হচ্ছে। এতে দেখা যায়, ২২ থেকে ২৮ মার্চের মধ্যে করোনা উপসর্গ নিয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। পরের সপ্তাহে এটি বেড়ে দাঁড়ায় ৬৩ জনে। এরপর এ ধরনের মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকে। এক সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২২২ জনের মৃত্যু হয়েছে গত ২১ থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত।

করোনা নিয়ে গুজব, অনিয়ম

করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আরও কয়েকটি বিষয়ে তথ্য তুলে ধরেছে বিপিও। তাদের প্রতিবেদন বলছে, করোনা নিয়ে গুজব ও মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ৮৬টি ঘটনায় ৮৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা।

এ ছাড়া ত্রাণ আত্মসাৎ, খাদ্যে ভেজাল ও করোনা বিষয়ে সরকারি নির্দেশনা লঙ্ঘনের মতো অনিয়ম ও অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে ৮৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জরিমানা করা হয়েছে ১৭ হাজার ৫৫৬ জনকে।

প্রতিবেদন বলছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে করোনাকে কেন্দ্র করে ২৪৫টি নির্যাতন ও সামাজিক হয়রানির ঘটনা ঘটেছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় ৩০৩টি বিক্ষোভ হয়েছে। সারা দেশে করোনা নিয়ে সৃষ্ট বিরোধের জের ধরে ১৫১টি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ২৫ জন মারা গেছেন এবং ৬০৮ জন আহত হয়েছেন।