টিকার চাহিদা ও মূল্য নির্ধারণে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন

করোনাভাইরাসপ্রতিরোধী টিকা সংগ্রহ ও নিরাপদ ও কার্যকর টিকা নির্বাচন চাহিদা নিরূপণ, বিতরণ ও দর-কষাকষির মাধ্যমে টিকার যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণের জন্য স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবের নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের সাত সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই কমিটি গঠনের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছেন বলে মন্ত্রিসভা সূত্রে জানা গেছে।

এই কমিটি দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বর্তমান ধারা ও ভবিষ্যৎ প্রক্ষেপণের আলোকে টিকার চাহিদা নিরূপণ করবে। টিকার মূল্য, প্রাপ্যতা, কার্যকারিতা ইত্যাদি বিবেচনায় নিরাপদ ও কার্যকর হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত টিকার সম্ভাব্য সব উৎস থেকে বাংলাদেশের জন্য উপযোগী টিকা নির্বাচন করবে। ইমার্জেন্সি ইউজ অথোরাইজেশন পাওয়া টিকার মূল্য দর-কষাকষির মাধ্যমে নির্ধারণ করবে। এই কমিটি প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেবে।

আরও পড়ুন

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানায়, গত ২৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউসের সভাপতিত্বে কোভিড-১৯ টিকা–সংক্রান্ত একটি জরুরি সভা হয়। ওই সভাতে আগামী চার মাসের জন্য টিকা সংগ্রহের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় বলা হয়, অর্থনৈতিক বিষয়–সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ টিকা সংগ্রহের ক্ষেত্রে সরাসরি ক্রয়পদ্ধতি অনুসরণ করবে। এ ছাড়া টিকার মূল্যের বিষয়টি নিয়ে দর-কষাকষি বা আলোচনার জন্য স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি কাজ করবে।

এই কমিটিতে আরও রয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালক, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন মহাপরিচালক, অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক পর্যায়ের একজন প্রতিনিধি এবং স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব।

আরও পড়ুন

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এ বছরের জানুয়ারি মাসে প্রথম জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয় অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা। এই টিকা ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের উৎপাদিত কোভিশিল্ড। দেশে এই টিকা এখন প্রয়োগ করা হচ্ছে। আর গত ২৭ এপ্রিলে রাশিয়ার টিকা স্পুতনিক–ভি অনুমোদন দেওয়া হয়। বিশ্বের ৬০টির বেশি দেশে টিকা ব্যবহৃত হচ্ছে।

সবশেষ ২৯ এপ্রিল চীনের প্রতিষ্ঠান সিনোফার্মার তৈরি এ টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। চীনের টিকাটি ব্যবহৃত হচ্ছে ৩৫টি দেশে।
সব মিলিয়ে সরকার করোনার তিনটি টিকার অনুমোদন দিল। এর মধ্যে দুটি টিকা দেশে উৎপাদনের কথা আলোচনায় আছে।

ভারত থেকে কেনা ও উপহার হিসেবে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৩ লাখ টিকা পেয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। চুক্তি হয়েছিল তিন কোটি টিকার। গত ডিসেম্বরে সেরামের সঙ্গে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী ছয় মাসের মধ্যে সব টিকা আসার কথা।

আরও পড়ুন

এদিকে চীন উপহার হিসেবে বাংলাদেশকে যে পাঁচ লাখ টিকা দিচ্ছে, তা ১০ মের মধ্যে আসতে পারে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, চীন থেকে আরও টিকা কেনার জন্যও প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। চার-পাঁচ কোটি ডোজ হলেও নেওয়া হবে। রাশিয়া থেকে টিকা আনার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।