ঢাকায় মৃত্যু বেড়েছে, চট্টগ্রামে কমেছে

দুই মাসে মৃত্যু বেড়েছে ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে। মৃত্যু কমেছে চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল বিভাগে।

করোনাভাইরাস
রয়টার্স প্রতীকী ছবি

দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের অর্ধেকই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। গত দুই মাসে ঢাকা বিভাগে মৃত্যু কিছুটা বেড়েছে। এ দুই মাসে মৃত্যু বেড়েছে খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগেও। অন্যদিকে এ সময়ে মৃত্যু কমেছে চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল বিভাগে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গতকাল শুক্রবারের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেওয়া তথ্যানুযায়ী, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ২১ জনের। এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৫ হাজার ৯৩ জন। গতকাল পর্যন্ত দেশে ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৭৬৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৩৮৩ জনের। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১১ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৯৩২ জন। মোট সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৬৭ হাজার ২৪ জন।

কোভিড-১৯-এ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করা হয় গত ১৮ মার্চ। শুরুর দিকে প্রায় এক মাস মৃত্যু ছিল অনিয়মিত ঘটনা। গত ৪ এপ্রিল থেকে গতকাল পর্যন্ত প্রতিদিন দেশে করোনায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কখনো মৃত্যু টানা কমতে দেখা যায়নি। মৃত্যুর সংখ্যা নিয়মিত ওঠানামা করতে দেখা গেছে।
মৃত্যুর তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, দেশে এখন পর্যন্ত মারা যাওয়া ব্যক্তিদের অর্ধেক, অর্থাৎ ৪৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। প্রায় ২ মাস আগে ১ আগস্ট পর্যন্ত যা ছিল ৪৭ দশমিক ৮ শতাংশ।
ঢাকার পরে করোনায় সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছে চট্টগ্রাম বিভাগে। মোট মৃত্যুর ২০ দশমিক ৬৬ শতাংশ হয়েছে এ বিভাগে। তবে গত দুই মাসে চট্টগ্রামে মৃত্যু কমেছে। ১ আগস্ট পর্যন্ত দেশের মোট মৃত্যুর ২৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ ছিল চট্টগ্রামে।

অন্য বিভাগগুলোতে মৃত্যুর সংখ্যা তুলনামূলক কম। গতকাল পর্যন্ত মোট মৃত্যুর খুলনায় ৮ দশমিক ০২ শতাংশ, রাজশাহীতে ৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ আর বরিশালে ৩ দশমিক ৯১ শতাংশ। সবচেয়ে কম মৃত্যু হয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগে। মোট মারা যাওয়া ব্যক্তিদের ২ দশমিক ১০ শতাংশ (১০৭ জন) এ বিভাগের বাসিন্দা।
কিছুদিন ধরে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আগের তুলনায় কম। মাঝেমধ্যেই দৈনিক মৃত্যু ৩০-এর নিচে থাকছে। কিন্তু নতুন রোগী শনাক্তের সংখ্যা যে হারে কমছে, এখনো মৃত্যু সে হারে কমছে না। এর ফলে মোট শনাক্তের সংখ্যা বিবেচনায় মৃত্যুর হার ধীরগতিতে হলেও বাড়ছে। ১ আগস্ট মোট শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ছিল ১ দশমিক ৩১ শতাংশ। গতকাল সেটা বেড়ে হয়েছে ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

কোনো দেশে সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে কি না, তা বোঝার জন্য কিছু নির্দেশক নির্ধারণ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তার একটি হলো টানা তিন সপ্তাহ ধরে মৃত্যু কমতে থাকা। কিন্তু বাংলাদেশে টানা মৃত্যু কমতে দেখা যাচ্ছে না। গত ১ সপ্তাহে (১৯ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর) মারা গেছেন ২১২ জন। এর আগের সপ্তাহে মারা গেছেন ২১৩ জন।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনায় আক্রান্ত মানুষের মধ্যে বয়স্ক, বিশেষ করে ষাটোর্ধ্ব এবং একই সঙ্গে অন্য রোগে আক্রান্ত রোগীদের মৃত্যু বেশি হচ্ছে। তবে বাংলাদেশে কম বয়সী মানুষের মৃত্যু বেশি হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে অর্ধেকের বয়স ৬০ বছরের কম।