নারায়ণগঞ্জে ভারতফেরত একজনের করোনা শনাক্ত, বাড়ি লকডাউন

করোনাভাইরাস
প্রতীকী ছবি

ভারতের চেন্নাইফেরত নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের এক ব্যক্তির শরীরের নমুনা পরীক্ষায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ ঘটনায় ওই ব্যক্তির বাড়ি স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শে লকডাউন করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। ওই বাড়ির প্রতিটি লোককে আইসোলেশনে রেখেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

ওই ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষার জন্য গাজী ল্যাবে পাঠানো হয়। গতকাল মঙ্গলবার পরীক্ষায় ধরা পড়ে তিনি করোনা পজিটিভ। এরপর থেকে ওই ব্যক্তি আলাদা রুমে অবস্থান করছেন এবং তাঁর সঙ্গে বাবা-মা, স্ত্রী-সন্তান, ভাবি, ভাতিজা-ভাতিজা এক বাড়িতে আছেন।

এ বিষয়ে জেলা করোনাবিষয়ক ফোকাল পারসন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ভারত থেকে ফেরত ওই ব্যক্তির করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাঁকে বাড়িতে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। পুরো বাড়ি লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন হলে ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে। জাহিদুল ইসলাম আরও বলেন, যেহেতু ওই ব্যক্তি ভারত থেকে এসেছেন, তাই তাঁর ও তাঁর বাড়ির লোকজনের সবার নমুনা পরীক্ষা করানো হয়। সেখানে তাঁর করোনা শনাক্ত হয়।

জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ভারত থেকে আসা ওই ব্যক্তির করোনার ধরন ভারতীয় প্রকৃতির কি না, তা যাচাই করতে ইতিমধ্যে আইইডিসিআরকে অবহিত করা হয়েছে। আমাদের ধারণা, ওই করোনাভাইরাস ভারতীয় প্রকৃতির হতে পারে। তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই ব্যক্তি চার বছর ধরে ভারতের চেন্নাইয়ে কাজ করেন। সেখানে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির অবনতি হলে ভয়ে ৮ মে আখাউড়া সীমান্তে আসেন। পরে আখাউড়া সীমান্ত পার হয়ে ওই ব্যক্তি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ভেঙে ভেঙে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের বরপা তারাবো এলাকায় বাড়িতে পৌঁছান। ৯ মে থেকে তিনি বাড়িতে অবস্থান করছেন। পরদিন ১০ মে স্থানীয় লোকজন বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে জানালে তারা পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে নমুনা পরীক্ষা এবং ওই বাড়ির সবাইকে কোয়ারেন্টিনে রাখেন। তাঁর কোনো উপসর্গ নেই।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, চেন্নাইফেরত ওই ব্যক্তির বাড়ি লাল পতাকা টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। ওই বাড়ির লোকজনকে টেলিমেডিসিন সেবাসহ ও খাবার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। তাঁর নমুনায় ভারতীয় ধরনের মিল রয়েছে কি না, সেটি পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনায় সংক্রমিত তিন রোগীর দুজন ছিলেন নারায়ণগঞ্জে। গত বছর ৩০ মার্চ করোনায় সংক্রমিত হয়ে এক নারীর মৃত্যু হয়। ওই বছর ৭ এপ্রিল করোনা সংক্রমণের জন্য নারায়ণগঞ্জকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ জেলা হিসেবে চিহ্নিত করেছিল আইইডিসিআর। এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে আজ বুধবার পর্যন্ত জেলায় ২১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে ১৩ হাজার ১৫৫ জন, আইসোলেশনে সুস্থ হয়েছেন ১২ হাজার ৫৯২ জনের। নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার ৫২৩ জনের।