বিশ্বে এটাই যেন হয় শেষ মহামারি

অতীত ও বর্তমান মহামারির অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বাধীন প্যানেল করণীয় ঠিক করেছে। তারা বলেছে, গত কয়েক দশকে একাধিক নতুন রোগের প্রকোপ দেখেছে বিশ্ব।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি স্বাধীন প্যানেল বলছে, মহামারি কী রূপ নেয়, এটা দেখার জন্য যেসব দেশ অপেক্ষা করে ছিল, তারা সফলতা দেখাতে পারেনি। সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ যেখানে একক বা স্পষ্ট ছিল, সেসব দেশের গৃহীত পদক্ষেপগুলো কার্যকর হতে দেখা গেছে। প্যানেল বিশেষজ্ঞরা এখনই বিশ্বের সব দেশকে রোগতাত্ত্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় পদ্ধতিগত ও জোরালো জনস্বাস্থ্য পদক্ষেপ নিতে বলেছেন।

এক বছরের বেশি সময় কাজ করে প্যানেল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে একটি প্রতিবেদন দিয়েছে। তাতে বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য আশু করণীয় সম্পর্কে সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি ভবিষ্যতের মহামারি ঠেকানোর পথও বলে দেওয়ার চেষ্টা আছে। প্রস্তুতি, উদ্যোগ, সহযোগিতা থাকলে এটাই হবে শেষ মহামারি, মানব জাতিকে আর কোনো মহামারির মুখোমুখি হতে হবে না—এটাই প্রতিবেদনের মূল সুর। প্রতিবেদনের শিরোনাম, ‘কোভিড-১৯: এটাই শেষ মহামারি’।

২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত কোন দেশ কীভাবে মহামারি মোকাবিলায় সাড়া দিয়েছে, তার পর্যালোচনা করে প্যানেল বলছে, প্রো–অ্যাকটিভ বা আগবাড়িয়ে সক্রিয় হয়ে ওঠা দেশগুলো সফল হয়েছে। এই দেশগুলো করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য ঝুঁকি সম্পর্কে আগেভাগে স্বীকৃতি দিয়েছিল বা উপলব্ধি করতে পেরেছিল এবং সেই অনুযায়ী সমন্বিত ব্যবস্থা নিয়েছিল। প্রাক্‌সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়ায় এই দেশগুলো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে হাতে সময় পেয়েছিল, তারা অন্য দেশের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েছে। বিশেষ করে তারা চীনের উহানে বিধিনিষেধের অভিজ্ঞতায় দেখেছিল, কঠোর পদক্ষেপ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর।

সফল হতে পারেনি যারা

কোন কোন দেশ মহামারি মোকাবিলায় সফল হয়েছে, কোন কোন দেশ খারাপ করেছে, তাদের নাম উল্লেখ নেই প্রতিবেদনে। কাজে সমন্বয় ছিল না এমন দেশগুলোতে পরিস্থিতি খারাপ দেখা যাচ্ছে। তারা বিজ্ঞান মানেনি, মহামারির সম্ভাব্য বিরূপ প্রভাবকে অস্বীকার করেছে। কাজ করলে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে—এ ব্যাপারে যাদের আস্থা ছিল না, তারা ভালো করেনি। যেসব দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে নানা সমস্যা ছিল, যারা স্বাস্থ্যকর্মীদের মূল্যায়ন করেনি এবং স্বাস্থ্য খাতে যাদের বরাদ্দ কম, তাদের মধ্যে সফলতা কম। এসব দেশের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার সক্ষমতা নেই।

যেসব দেশ বৈজ্ঞানিক প্রমাণ অস্বীকার করেছে, তারা সামাজিক সংক্রমণ প্রতিহত করতে সফল হয়নি। এসব দেশে নেতৃত্বের ঘাটতিও রয়েছে। যেসব নেতা সংশয়বাদী, যাঁরা নতুন নতুন বৈজ্ঞানিক তথ্য-প্রমাণ অগ্রাহ্য করেছেন, তাঁরা জনগণের আস্থা ও সহযোগিতা পাননি।

কিছু দেশের অবস্থান এই দুইয়ের মাঝামাঝি। এসব দেশের নেওয়া পদক্ষেপগুলোতে পূর্বাপর কোনো সংগতি ছিল না। এরা সংক্রমণ পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার পর অথবা হাসপাতালে রোগীর শয্যা পাওয়া কঠিন হয়ে উঠছে এমন পরিস্থিতিতে বিধিনিষেধের মতো পন্থা বেছে নিয়েছে। সীমান্ত বন্ধের ব্যাপারে তাদের সিদ্ধান্তে ভিন্নতা ছিল। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং অত্যন্ত কার্যকর পন্থা হলেও তারা তা ঠিকভাবে করেনি, ঠিক সময়ে করেনি।

এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক অধ্যাপক বে-নজির আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘যেসব কাজ করে কিছু দেশ মহামারি নিয়ন্ত্রণে ভালো করেছে, আমরা নিশ্চয়ই সেই তালিকায় পড়ি না। যেমন আমরা প্রো–অ্যাকটিভ (আগেভাগে সক্রিয় হওয়া) হয়ে কাজ করিনি। আমরা অন্যের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাইনি। অন্যদিকে যেসব দেশ খারাপ করেছে, তাদের কাজের সঙ্গে আমাদের কাজের মিল আছে। মাঝারি মানের দেশগুলোর সঙ্গেও আমাদের কিছু মিল আছে।’

কেন এই প্যানেল

মহামারি পরিস্থিতি ব্যাপক আকার ধারণ করার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের মে মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বার্ষিক সভা ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেম্বলি থেকে মহাপরিচালককে একটি পক্ষপাতহীন, স্বাধীন প্যানেল গঠন করার অনুরোধ করা হয়। বলা হয়, এই প্যানেল আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করবে এবং করণীয় সম্পর্কে সুপারিশ করবে। ১৩ সদস্যের এই প্যানেলের কো-চেয়ার ছিলেন নোবেল বিজয়ী লাইবেরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট এলেন জনসন সারলিফ এবং নিউজিল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হেলেন ক্লার্ক। এই প্যানেলকে তথ্য-উপাত্ত, পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণে সহায়তা করেছেন বিভিন্ন স্তরের বিশেষজ্ঞরা। এঁদের অধিকাংশের মহামারি নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা ছিল। গত সপ্তাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

এই প্যানেলের লক্ষ্য ছিল, বর্তমান ও অতীতের মহামারির অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ভবিষ্যতের জন্য বিজ্ঞানভিত্তিক একটি পথনির্দেশনা তৈরি করা। এর মাধ্যমে বিশ্বের দেশগুলো ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতো বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেন কোনো রোগের প্রকোপ মহামারিতে পরিণত হওয়ার আগেই প্রতিহত করতে সক্ষম হয়। আবার মহামারি দেখা দিলেও তা যেন বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ও আর্থসামাজিক সংকট সৃষ্টি না করে, সে বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে।

প্রতিবেদনের শুরুতেই বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ মহামারি দেখিয়ে দিয়েছে এই বিশ্ব কতটা ঝুঁকিপূর্ণ ও ভঙ্গুর। এই ভাইরাস পুরো সমাজকে নাড়া দিয়েছে, বিশ্বের সমগ্র জনগোষ্ঠীকে সমূহ বিপদের মধ্যে ফেলেছে এবং তারা গভীর অসমতার মুখোমুখি হচ্ছে। বিভিন্ন দেশের মধ্যে এবং একই দেশের মধ্যে বিরাজমান বিভাজন ও বৈষম্য আরও প্রকট হচ্ছে, প্রান্তিক ও দুর্দশাগ্রস্ত জনগোষ্ঠী আরও নাজুক পরিস্থিতিতে পড়ছে। স্মরণকালে এটি স্বাস্থ্য ও আর্থসামাজিক সংকটের সবচেয়ে বড় ঘটনা।

প্যানেল বলেছে, ‘আমাদের বার্তা স্পষ্ট: আর কোনো মহামারি নয়। আমরা যদি এই উদ্দেশ্যকে গুরুত্বের সঙ্গে না নিই, তাহলে আরও একটি দুর্যোগের মুখে আমরা বিশ্বকে রেখে যাব।’

অতীত অভিজ্ঞতা

প্যানেলের কাছে এটা স্পষ্ট ধরা পড়েছে যে এই মহামারি মোকাবিলার জন্য বিশ্ব প্রস্তুত ছিল না। সম্ভাব্য মহামারি বিষয়ে যেসব সতর্কবাণী ছিল, তাতে কেউ কান দেয়নি। এটা বড় ধরনের ব্যর্থতা। এই ব্যর্থতার কারণেই কোভিড-১৯ মহামারি এতটা মারাত্মক হয়ে উঠতে পেরেছে।

প্রতিবেদনে ২০০৩ সালে সার্সের প্রকোপ, ২০০৯ সালে এইচ১এন১ ইনফ্লুয়েঞ্জা মহামারি, ২০১৪ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে ইবোলা, জিকার ও মার্সের প্রকোপ উল্লেখ করে কোন সময় কী কী সতর্কতার কথা বলা হয়েছিল, তার উল্লেখ আছে।

২০০৯ সালের এইচ১এন১ মহামারির পর ১১টি উচ্চপর্যায়ের প্যানেল ও কমিশন করা হয়েছিল এবং মোট ১৬টি প্রতিবেদন তৈরি হয়েছিল। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, মহামারির উচ্চ ঝুঁকিকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে এবং প্রস্তুতি ও সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়গুলো মারাত্মকভাবে অপর্যাপ্ত। ভবিষ্যতের মহামারি ব্যাপকতায় ও ধ্বংস করার ক্ষমতায় পশ্চিম আফ্রিকার ইবোলা প্রকোপকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে।

বর্তমান প্যানেল বলছে, মহামারি থেকে বিশ্বকে রক্ষা করার জন্য ধারাবাহিকভাবে বার্তা দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু প্রতিরোধে অধিকাংশ সুপারিশ বাস্তবায়িত হয়নি। যার ফলে মহামারি বা অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকি দূর হয়নি। যুদ্ধ, সন্ত্রাসবাদ বা পারমাণবিক দুর্ঘটনার মতো উদ্বেগের কারণ হয়ে আছে মহামারি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহামারি মোকাবিলার প্রস্তুতির পরিকল্পনা করা সরকারের কাজ। একই কাজ বিশ্বের সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোরও। দেশ বা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে তা তদারকি করা দরকার। বিভিন্ন দেশের জাতীয় প্রস্তুতি পরিকল্পনা পর্যালোচনা করে প্যানেল বলছে, এসব পরিকল্পনায় অর্থায়ন অপর্যাপ্ত। অনেকের এ ধরনের কোনো পরিকল্পনাই নেই, কিছু দেশের রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতির ঘাটতি আছে।

এসব ঘাটতি ঝুঁকির পটভূমি তৈরি করে। এর সঙ্গে যুক্ত হয় আরও কিছু বিষয়। জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের অবনতি নতুন জীবাণুর আবির্ভাবে ভূমিকা রাখছে। ১৯৯০ সালের চেয়ে এখন আকাশপথে ভ্রমণ চার গুণ বেড়েছে। একটি ভাইরাস কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বিশ্বের যেকোনো স্থানে পৌঁছে যেতে পারে। একটি নতুন রোগ যেকোনো সময় দেখা দিতে পারে এবং তা দ্রুত সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

সাম্প্রতিককালে অধিকাংশ নতুন রোগের উৎস পশু-প্রাণী। ভূমি ব্যবহার, খাদ্য উৎপাদন ও জনসংখ্যা বৃদ্ধি নতুন রোগ আবির্ভাবের ঝুঁকি তৈরি করেছে। এসব ব্যাপারে কড়া নজরদারির জন্য দরকার বহুপক্ষীয় সহযোগিতা ও সমন্বয়। মহামারির আগে নজরদারির ও সতর্কতামূলক যে ব্যবস্থা ছিল, তার চেয়ে ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার গতি ছিল বেশি।

কী ঘটেছিল উহানে

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে কিছু মানুষ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। পরিচিত নিউমোনিয়ার চেয়ে এই নিউমোনিয়ায় পার্থক্য ছিল। এই নিউমোনিয়ার কারণ জানতে পারছিলেন না চিকিৎসকেরা। প্রচলিত চিকিৎসায় রোগী ভালো না হওয়ায় চিকিৎসকেরা একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নমুনা পরীক্ষা করেন। চিকিৎসকেরা জানতে পারেন, কিছু রোগী হুয়ানান সি ফুড মার্কেটে গিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে এই মার্কেট অনুসন্ধানের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। ৩১ ডিসেম্বর ও পরের দিন ওই মার্কেট ধুয়েমুছে সাফ করা হয় ও কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে দেয়। স্থানীয় প্রশাসনের এই উদ্যোগ সন্দেহের কারণ হয়ে আছে। বলা হচ্ছে, ভাইরাসের উৎস এই মার্কেট কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে।

সংক্রমণের ঘটনা ঘটে ২০১৯ সালে ডিসেম্বরের শেষ দুই সপ্তাহে। স্থানীয় চিকিৎসকদের উদ্যোগ ও পরিশ্রম নতুন রোগ সম্পর্কে জানতে সহায়তা করে। ৩১ ডিসেম্বর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্থানীয় কার্যালয় প্রথম নতুন রোগের বিষয় আনুষ্ঠানিকভাবে জানতে পারে।

উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি ২ জানুয়ারি প্রথম নতুন ভাইরাসের জিন বিশ্লেষণ করে। ৫ জানুয়ারি সাংহাই পাবলিক সেন্টার পূর্ণাঙ্গ জিন বিশ্লেষণের তথ্য উন্মুক্ত ওয়েবসাইট জিনব্যাংকে জমা দেয় এবং তা ১১ জানুয়ারি প্রথম প্রকাশ করা হয়। ১২ জানুয়ারি প্রথমে চীনা কর্তৃপক্ষ ও পরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সংবাদ ব্রিফিং করে। ২০-২১ জানুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মিশন উহান পরিদর্শনে যায়।

সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে উহানে ২৩ জানুয়ারি বিধিনিষেধ আরোপ করে কর্তৃপক্ষ। তখন উহানে ৮৩০ জন শনাক্ত হয়েছিল এবং ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ৩০ জানুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে। এরপরের ইতিহাস মহামারির।

এখন করণীয়

প্যানেল শক্তিশালী, গ্রহণযোগ্য ও বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশ করেছে। এসব সুপারিশ নিয়ে বিতর্ক হতে পারে, কোনো কোনো সুপারিশ চ্যালেঞ্জও করা যেতে পারে, কিন্তু সুবিধামতো সময়ে এসব সুপারিশ নিয়ে কাজ করা হবে বলে ফেলে রাখার সুযোগ নেই।

সুপারিশে বলা হয়েছে, কিছু কাজ এখনই করতে হবে। প্রতিটি সরকারকে সংক্রমণ কমাতে জনস্বাস্থ্য উদ্যোগকে জোরদার করতে হবে, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সম্মতিতে গৃহীত স্পষ্ট ও পূর্ণাঙ্গ কৌশলপত্র প্রকাশ করতে হবে। টিকা তৈরি করছে এমন উচ্চ আয়ের দেশগুলো ৯২টি নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশকে ১ সেপ্টেম্বরের আগে ১০০ কোটি ও ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ের আগে আরও ২০০ কোটি টিকা কোভ্যাক্সের মাধ্যমে পাঠাতে হবে।

এভাবে জি-৭, জি-২০, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আশু করণীয় সম্পর্কে সুপারিশ করেছে প্যানেল। টিকা, পরীক্ষা সামগ্রী, ওষুধ, অক্সিজেন ও অক্সিজেন সামগ্রী সরবরাহ বা কেনার জন্য প্রত্যেকের প্রতিশ্রুতি অবিলম্বে পূরণ করার কথা বলা হয়েছে।

ভবিষ্যতের মহামারি সামনে রেখে নেতৃত্ব, অর্থায়ন ও জবাবদিহি নিয়ে পৃথক সুপারিশ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, প্রতিটি সরকারকে তাদের জাতীয় পরিকল্পনা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী হালনাগাদ করতে হবে। প্রতিটি সরকারকে প্রযুক্তি স্থানান্তরের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

এ ছাড়া জাতীয় মহামারি সমন্বয়কারী নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সমন্বয়কারী রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের কাছে দায়বদ্ধ থাকবেন এবং সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করবেন।