মেট্রোরেল প্রকল্পে এখন পর্যন্ত ৩৪৩ জন করোনায় আক্রান্ত

চলছে মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ
ফাইল ছবি

ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্পের অধীনে কর্মরত ব্যক্তিদের মধ্যে এ পর্যন্ত ৩৪৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীরাও আছেন।

সম্প্রতি ছয়জন বিদেশি প্রকৌশলী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার ভার্চ্যুয়ালি এক সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম এ এন সিদ্দিক। ঢাকার মেট্রোরেল প্রকল্পের দায়িত্বে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি ডিএমটিসিএল। কোম্পানির এমডি জানান, মেট্রোরেল প্রকল্পে কর্মরত সব বিদেশি প্রকৌশলীকে ১৭ মার্চ থেকে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া শুরু হবে।

সংবাদ সম্মেলনে এম এ এন সিদ্দিক বলেন, উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত নির্মাণাধীন মেট্রোরেলের কাজের মোট অগ্রগতি ৫৮ দশমিক ৭২ শতাংশ। এর মধ্যে উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশের অগ্রগতি ৮১ দশমিক ৪২ শতাংশ। এই অংশের ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটারের পুরোটাতেই উড়ালপথের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন রেললাইন বসানোসহ অন্যান্য কাজ চলছে।

ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, করোনার সংক্রমণ শুরুর পর গত বছর এপ্রিল ও মে মাসে মেট্রোরেলের কাজ বন্ধ থাকে। পরে চালু হলেও বিদেশি কর্মীদের অনেকেই নিজ নিজ দেশে চলে যাওয়ায় কাজে গতি হারায়। একপর্যায়ে গাবতলী ও উত্তরায় দুটি ফিল্ড হাসপাতাল নির্মাণ করে কর্তৃপক্ষ। করোনার আগে মেট্রোরেল প্রকল্পে প্রায় ১০ হাজার লোক কাজ করছিলেন। তাঁদের তিন শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। এগুলো হচ্ছে পরামর্শক, ঠিকাদার, ঠিকাদারের সহযোগী (সাবকন্ট্রাক্টর)। এর মধ্যে পরামর্শকদের প্রায় সবাই বিদেশি। অল্প কিছু দেশীয় পরামর্শক আছেন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে বিদেশি ও দেশি সব মানুষই আছেন।

আগামী ১৬ ডিসেম্বর মেট্রোরেল চালুর কথা বলেছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এ সময়ে পুরোটা চালু হবে, নাকি আগারগাঁও পর্যন্ত প্রথম চালু হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে এম এ এন সিদ্দিক বলেন, আগামী ২৩ এপ্রিল মেট্রোরেলের প্রথম ট্রেন আসার কথা রয়েছে। ট্রেন এলেই পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু হবে। এরপর সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে যাত্রী পরিবহনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পুরো পথে একসঙ্গে, নাকি অংশবিশেষ আগে চালু করা হবে, সেটা সরকার ঠিক করবে।

মতিঝিল থেকে মেট্রোরেলের লাইন কমলাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত বর্ধিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্ধিত অংশ নির্মাণে কী পরিমাণ ব্যয় হতে পারে, তা জানতে চাইলে এমডি বলেন, এই অংশের নকশা প্রণয়নের কাজ চলছে। শেষ হলে ব্যয় সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।

উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার মেট্রোরেল নির্মাণের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে ২০১২ সালে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা।

জাপানের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা জাইকা সিংহভাগ অর্থায়ন করছে। এটি বাদে ঢাকায় আরও পাঁচটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ২০৩০ সালের মধ্যে সব কটি মেট্রোরেল চালু করার পরিকল্পনা আছে।