লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর সুপারিশ

ফাইল ছবি

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান কঠোর লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে করোনা মোকাবিলা সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। গতকাল রোববার রাতে কমিটির এক ভার্চ্যুয়াল সভায় এই সুপারিশ করা হয় । এরপর সপ্তাহ শেষে আবার করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথাও বলেছে কমিটি।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ১৪ এপ্রিল থেকে লকডাউন চলছে। ২১ এপ্রিল তা শেষ হওয়ার কথা। তার আগেই কমিটি এই পরামর্শ দিল।

এদিকে লকডাউন পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে আজ সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উদ্যোগে সভা হওয়ার কথা। সেখানে পরিস্থিতি বিবেচনা করে লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হবে কি না সেটা ঠিক হওয়ার কথা।

কমিটির এক সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, নতুন করে এক সপ্তাহ কঠোর লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে। এর মেয়াদ ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানোর জন্য বলা হয়েছে। লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর পাশাপাশি ঢাকা নগরীর প্রতিটি থানায় সরকারি উদ্যোগে করোনা পরীক্ষার বুথ স্থাপনের সুপারিশ করা হয়। এ ছাড়া বেসরকারি পর্যায়ে করোনা পরীক্ষার ফি কমানোর সুপারিশও করা হয়।

কমিটির সূত্র বলেছে, করোনা পরীক্ষার সামগ্রীর মূল্য কমে গেছে। সে ক্ষেত্রে বেসরকারি পর্যায়ে এখন এর পরীক্ষার মূল্য কমানো সম্ভব।

সভায় বদ্ধ জায়গায় থাকা বাজারগুলো উন্মুক্ত স্থানে নিয়ে আসার জন্য সুপারিশ করা হয়। তা না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে যাবে বলে মনে করে কমিটি।

করোনা প্রতিরোধে নতুন কোনো হাসপাতাল চালু করার আগে সেখানে পর্যাপ্ত সুবিধা নিশ্চিত করার বিষয়টি উঠে আসে বৈঠকে। এর ব্যত্যয় হলে মৃত্যুর আশঙ্কা আরও বেড়ে যেতে পারে বলেও কমিটি মনে করে।

লকডাউনের সময় জরুরি সেবার সুনির্দিষ্ট তালিকা তৈরির সুপারিশ করে কমিটি। এ প্রসঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে রাস্তায় অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির উদাহরণ তুলে ধরা হয়। জাতীয় কারিগরি কমিটির এসব সুপারিশ মুখ্য সচিব ও স্বাস্থ্য সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে।

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মারাত্মক আকার নেওয়ায় সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার প্রথমে ৫ এপ্রিল থেকে সাত দিনের জন্য গণপরিবহন চলাচলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ জারি করেছিল। পরে তা আরও দুদিন বাড়ানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত আরও কঠোর বিধিনিষেধ দিয়ে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ শুরু হয়। বর্তমানে লকডাউনে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। তবে বিমান, সমুদ্র, নৌ ও স্থলবন্দর এবং এ-সংক্রান্ত অফিসগুলো এই নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকবে। প্রথমে ব্যাংক বন্ধের ঘোষণা দিলেও পরে তা আবার খোলার সিদ্ধান্ত হয়। আর শিল্পকারখানাগুলো নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু আছে।